সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর মুকুট উঠল এক বঙ্গকন্যার মাথায়। ব্রিটেনের সেরা সুন্দরী মিস ইংল্যান্ডের খেতাব জিতলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বাঙালি ভাষা মুখোপাধ্যায়। ২৩ বছরের এই তরুণী নিছক সুন্দরী মডেল নন। মডেলিং করা তাঁর নেশা। পেশায় তিনি চিকিৎসক। এই প্রথম এমন কোনও ‘জিনিয়াস’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন। এবছরের ‘মিস ইন্ডিয়া’র সঙ্গে ভাষাকে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’-এর মঞ্চে দেখা যাবে। সেই মুকুট কার মাথায় উঠবে তা দেখা সময়ের অপেক্ষা। এর আগে আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা মঞ্চে প্রথম বাঙালি হিসাবে ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরী হন সুস্মিতা সেন।
ইংল্যান্ডের ডার্বির বাসিন্দা ভাষা। কলকাতায় জন্মালেও ২০০৪ সালে ন’বছর বয়সে বাবা দুর্গা মুখোপাধ্যায় ও মা মিতার সঙ্গে ব্রিটেনে থাকতে শুরু করেন। ভাষার দু’টি মেডিক্যাল ডিগ্রি আছে। একটি ডিগ্রি মেডিক্যাল সায়েন্সে অন্যটি মেডিসিন ও সার্জারিতে। বাংলা-সহ পাঁচটি ভাষায় স্বচ্ছন্দে কথা বলতে পারেন তিনি। বুদ্ধিমত্তা লেভেল ১৪৬। বৃহস্পতিবার রাতে মিস ইংল্যান্ড হওয়ার পর ভাষা বলেন, “জুনিয়র ডাক্তার হয়েছি। ডাক্তারি ও মডেলিং প্রতিযোগিতা একসঙ্গে সামলাতে ভীষণ চাপ যাচ্ছিল। সকালে নার্সিংহোমে কাজে যেতে হয়। তারপর অনেক ট্রাভেল করে এসে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসতে হত।”
বাঙালিকে গর্বিত করে ভাষা আরও বলেছেন, “সুন্দরী মডেলদের মাথায় বুদ্ধি নেই বলে অনেকে ভাবেন। এমনটা বাস্তব নয়। মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় প্রথম সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কথা ভাবি। পড়াশোনা থেকে একটু বিরতি নেওয়ার জন্যই মডেলিং শুরু করি।” বিজয়িনী হিসাবে পুরস্কারস্বরূপ মরিশাসে ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। তবে এই মুহূর্তে সেই ছুটি উপভোগের ফুরসত নেই ব্যস্ত ডাক্তারের।
মেয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার পর কেমন লাগছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে ভাষার বাবা, পেশায় শেফ দুর্গার বক্তব্য, “মেয়ের জন্য আমি ভীষণ গর্বিত। জানতাম ও জিতবেই। ও ভীষণ সৃষ্টিশীল। যে চ্যালেঞ্জই নিক না কেন তাতে ঠিক সফল হয়। ভাষা কোনও জিনিস মাঝপথে ছেড়ে দিতে জানে না। তাই জুনিয়র ডাক্তারের দায়িত্ব সামলানোর সঙ্গে মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতার ঝক্কি সব একসঙ্গে সামলেছে।” কলকাতার সঙ্গে নাড়ির যোগ রয়েছে ভাষার। তবে বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের কারণে ও কেরিয়ারের চাপে দীর্ঘদিন কলকাতার বাড়িতে আসা হয়নি। সুযোগ হলে শীঘ্রই তিলোত্তমা নগরীতে আসবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মিস বাঙালি ইংল্যান্ড।
মা মিতার কথায়, “আমার মেয়ের সাফল্যের জন্য ভীষণ গর্ববোধ করছি। ও ছোট থেকেই প্রতিভাময়ী। কাল পুরস্কার জিতেই আজ সকালে ট্রেন ধরে তিন ঘণ্টা জার্নি করে হাসপাতাল চলে গিয়েছে। প্রতিযোগিতা চলাকালীনও রোজ এই পরিশ্রম করত। ৭০ পাউন্ড দামের ট্রেনের টিকিট কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। ও নিজেই নিজের খরচ চালায়। এই লড়াই ওকে আজ বিজয়ী করেছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.