সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বাছা পশ’ (Bacha Posh)। দারি ভাষায় যার অর্থ, ছেলেদের পোশাকে মেয়ে। আফগানিস্তানের এমন এক প্রথা, যেখানে পরিবারের সুরক্ষার স্বার্থে এক মেয়েকে ছেলে সাজিয়ে রাখা হয়। বছরের পর বছর ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’ চলে এই প্রথা। যাতে পুরুষালি সাজে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি থাকে, থাকে রোজগার করার অনুমতি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তালিবানি তাণ্ডবের (Taliban Terror) কোপ বহু বছরের পুরনো এই প্রথাতেও পড়তে পারে।
‘দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড গালর্স অফ কাবুল’- জেনি নোরবার্গের এই বইকে ‘বাছা পশ’-এর দলিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে উল্লেখ করা আছে, তালিবান যুগের আগে কীভাবে আফগানিস্তানে (Afghanistan) প্রচলিত ছিল এই প্রথা। নয়ের দশকে প্রথম তালিবান শাসনের সময়ও কোপ পড়েছিল এই প্রথার উপর। এবারও কি সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে ? উঠছে প্রশ্ন।
অবশ্য দ্বিতীয়বার আফগান মুলুক দখল করার পর তালিবানের দাবি, তাঁরা বদলে গিয়েছে। এই দাবির তেমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। বরং মহিলাদের জীবনে তালিবানি ভয় রোজই নতুন করে বাড়ছে। এবার আশঙ্কা ‘বাছা পশ’ প্রথাকে কেন্দ্র করে। ইতিমধ্যেই একাধিক মহিলা সংগঠন দাবি করেছে, তালিবান সরকারে সবচেয়ে দুর্বিষহ হতে চলেছে মহিলা ও শিশুদের জীবন। বিশেষ করে আফগানিস্তানে কন্যাসন্তানদের অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে রাষ্ট্রসংঘের (UN)।
সম্প্রতি CNN-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড গালর্স অফ কাবুল’-এর লেখক জেনি নোরবার্গ দাবি করেছেন, ‘‘আফগান শিশুদেরও ভাল রাখবে না তালিবান। ওরা বাছা পশ প্রথা বন্ধ করবেই। কারণ, তালিবান দেশের উন্নতি চায় না। সেদেশে শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য তালিবানি হাতে কোন খাতে বইবে, তা নিয়ে আশঙ্কিত আমি।’’
তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, তালিবান আসার আগেও আফগানিস্তানে মহিলাদের জীবন খুব ভাল ছিল, তা পুরোপুরিভাবে দাবি করা যায় না। কারণ, পরিসংখ্যান বলছে, ছয় থেকে আটের দশকের সঙ্গে তুলনা করলে, দু’হাজার এক পরবর্তী সময়ের পর আফগান মহিলাদের (Afghan Women) জীবনে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। রাষ্ট্রসংঘের এক পরিসংখ্যানে দাবি করা হয়েছে, এক সময় আফগান মহিলাদের দিয়ে জোর করে দেহব্যবসায় নামানো হয়। শুধু তাই নয়, ইউরোপ, আমেরিকা এবং উপমহাদেশে তাদের জোর করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে বারবার। এই অবস্থায় আবার তালিবান ক্ষমতায় আসায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। জেনি নোরবার্গের কথায়, ‘‘পরিবর্তন কিছুই হল না। আফগান মহিলাদের জীবন এর আগেও দুর্বিষহ ছিল। এখন আরও দুর্বিষহ হল।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.