সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের আরজি উড়িয়ে আলোচনার টেবিলে বসতে নারাজ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। ফলে মঙ্গলবার থেকে বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে লড়াই। এই সংঘাত আরও বড় আকার নিলে এই যুদ্ধে তুরস্ক ও রাশিয়ার শামিল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। ফলে ককেশাস অঞ্চলে দেখা দেবে চরম অস্থিরতা।
রবিবার দুই দেশের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকেই সংঘর্ষ থামানোর আরজি জানিয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া ও বাকি দেশগুলি। কিন্তু সেই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে দুই যুযুধান প্রতিবেশী। এক রুশ সংবাদমাধ্যমে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ সাফ জানিয়ে দেন এই বিষয়ে আলোচনা করার মতো কিছু নেই। একই সুরে একই সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, “লড়াই চলাকালীন আলোচনার কোনও সম্ভাবনা নেই।”
এদিকে, এই যুদ্ধ নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে রাষ্ট্রসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ। তারপরই তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষ থামানোর আরজি জানান রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস। যদিও সেই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে বর্তমানে লুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই প্রাক্তন সদস্য দেশ। এর ফলে নাগর্নো-কারাবাখে আর্মেনিয়ান বিদ্রোহী ও আজারবাইজান বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়েছে। এদিন আর্মেনিয়া দাবি করেছে, নিজেদেরই একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে ফেলেছে তুরস্কের বায়ুসেনা। আর্মেনিয়ার বায়ুসীমার উপর শত্রু ভেবে নিজেদেরই একটি যুদ্ধবিমানে মিসাইল হামলা চালায় তুরস্কের একটি এফ-১৬ বিমান। যদিও এই দাবি নস্যাৎ করেছে আঙ্কারা।
উল্লেখ্য, আর্মেনিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তি রয়েছে রাশিয়ার। এর ফলে ওই দেশের উপর হামলা হলে মদত দিতে বাধ্য মস্কো। কিন্তু এক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল করে আজারবাইজানের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। তাই এই সংঘর্ষ দ্রুত মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই বিষয়ে তুরস্কের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছে মস্কো। এই সংঘর্ষে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০০ জনের। বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে তুমুল গোলাবর্ষণ চলছে। নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবেইজানের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে হলেও সেটির দখল রয়েছে আর্মেনিয়ান বিরোধীদের হাতে। অভিযোগ, আজারবাইজানের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে ওই বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছে আর্মেনিয়া (Armenia)। রবিবার আজারবাইজানের চারটি সামরিক হেলিকপ্টার গুলি করে নামিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ১০টি ট্যাংক ও ১৫ টি ড্রোনে আঘাত হানা হয়েছে বলে দাবি করেছে আর্মেনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.