সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্রোহী হংকংকে (Hong Kong) বাগে আনতে সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারি করেছে চিন (China)। এবার হংকংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এবং স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নে চিনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল দুই পুরনো ব্রিটিশ উপনিবেশ অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা। গণতন্ত্রকামীদের সমর্থন জানিয়েছে হংকংয়ের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি বাতিল করল দুই দেশ। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই পদক্ষেপ করেছেন।
স্কট মরিসন জানিয়েছেন, “চিনের নতুন আইন হংকংয়ের স্বতন্ত্র আইনকে খর্ব করেছে। বেজিং হংকংয়ের স্বায়ত্ত্বশাসনকে ধ্বংস করেছে। এর প্রতিবাদে হংকংয়ের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি বাতিল করছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত হংকংয়ের বাসিন্দাদের ভিসার মেয়াদও পাঁচ বছর বাড়ানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে হংকংয়ের বাসিন্দাদের অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হবে। তাঁদের বাসিন্দাদের আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন থাকবে অস্ট্রেলিয়ার। হংকংয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমনপীড়নের জন্য গোটা দুনিয়ার কাছে জবাবদিহি করতে হবে চিনকে।” উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় এখন এক লক্ষের বেশি হংকংয়ের নাগরিক পড়াশোনা এবং কাজের জন্য রয়েছেন।
এদিকে, হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, “হংকংয়ে কোনওরকম স্পর্শকাতর সেনাপণ্য সরবরাহ রপ্তানির অনুমতি দেবে না কানাডা। এবং অবিলম্বে তা কার্যকর করা হবে। হংকংয়ের বিরুদ্ধে চিন যে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করেছে তা কানাডা মানছে না। হংকংয়ের বাসিন্দাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে চিনের দমননীতির বিরুদ্ধে কানাডা অবস্থান নেবে।”
তবে চিন ও কানাডার এই কূটনৈতিক লড়াইয়ের ইতিহাস অনেক পুরনো। এদিন ট্রুডোর এই পদক্ষেপ তারই জের বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। ফলে চিনের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দেখানো রাস্তাতেই হাঁটলেন ট্রুডো এবং অজি প্রধানমন্ত্রী মরিসন। এই তিন দেশই চিনের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করল। এই ঘটনার জবাবে চিনা বিদেশমন্ত্রক বলেছে, ‘হংকং নিয়ে কমনওয়েলথ ঐক্য দেখাতে নেমেছে কানাডা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া। তাতে লাভ হবে না। নয়া নিরাপত্তা আইন ওই তিন দেশের সঙ্গে কোনওভাবেই সম্পর্কিত নয়। তাই হংকং নিয়ে তিন দেশের মন্তব্য ও হস্তক্ষেপ চিন বরদাস্ত করবে না।’ হংকংয়ের চিনপন্থী সরকারি আধিকারিক ও চিনা বাসিন্দারা চিনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অন্য বাসিন্দারা ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.