সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ বা দশ নয়৷ প্রায় ৮০ বছরের জীবনে অন্তত ষাটজনকে খুনের অভিযোগে কারাবাসে থাকা অভিযুক্ত সম্পর্কে যত তথ্য সামনে আসছে, ততই চোখ কপালে উঠছে তদন্তকারীদের৷ ক্যালিফোর্নিয়ার জেলে এখন সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে বছর উনআশির স্যামুয়েল লিটল৷
সেই ১৯৭৪ বা ৮৪ সাল থেকে কবে, কখন, কাকে হত্যা করেছে, তাঁরা দেখতে কেমন ছিল, সমস্ত বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খ দিয়ে চলেছে খুনি৷ কারাগারের দেওয়ালে বিভিন্ন মানুষের ছবি এঁকে, তাঁদের সম্পর্কে লিখে সবটাই জানাচ্ছে সে৷ কারও চোখের মনির রং, কারও উচ্চতা, কারও বা চেহারার অন্য কোনও বিশেষত্ব খুঁটিয়ে মনে রেখেছে স্যামুয়েল৷ আর জেরার মুখে তাই-ই পরপর উগড়ে দিচ্ছে তদন্তকারীদের সামনে৷ নিজেই জানাচ্ছেন, সে ওহাইয়োতে বড় হয়েছে এবং সেখানে অন্তত ৫ জনকে খুন করেছে৷ ২০১২ সালে তিন মহিলাকে খুনের অভিযোগে কেনটাকি থেকে গ্রেপ্তার হয় স্যামুয়েল৷ সেই থেকেই মামলা চলছে৷ পরে তাকে কেনটাকি থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার জেলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ১৯৮১ থেকে ধারাবাহিকভাবে নিখুঁত পরিকল্পনামতো একের পর এক খুন করে আসছে সে৷ মূলত মহিলারাই তার টার্গেট ছিল৷ বিভিন্ন বয়সী মেয়েরা তার হাতে খুন হয়েছে বলে জেরায় জানিয়েছে স্যামুয়েল৷
এসব শুনে এফবিআইয়ের দুঁদে গোয়েন্দারা নিশ্চিত, মার্কিন ইতিহাসে ইনিই সবচেয়ে উর্বর মস্তিষ্কের সিরিয়াল কিলার৷ কোথাও কোনও ধরে ভুল ধরে ফেলার বিশেষ উপায় রাখেনি৷ অন্তত ৬০ জনকে এভাবে খুন করে, তবেই ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে৷ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, প্রথমদিকে স্যামুয়েল নিজের অপরাধ সম্পর্কে একেবারেই মুখে কুলুপ এঁটে নির্বিকার ছিল৷ পরবর্তী সময়ে তিনি ছবি এঁকে সব বোঝাতে থাকে৷ তাতেই গোয়েন্দাদের মনে সন্দেহ জাগে, স্যামুয়েলের হাতে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি৷ একের পর এক পুরনো মামলা আদালতে ওঠে৷ এমনকী স্যামুয়েলের নৃশংসতার নমুনা পেয়ে বিচারকদেরও চক্ষু চড়কগাছ৷ ধীরে ধীরে বোঝা যায়, সত্যিই আমেরিকার অপরাধের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ংকর চরিত্রের নাম স্যামুয়েল লিটল৷
তবে এত সব তথ্য হাতে আসায় মনে করা হচ্ছে, এবার দেশের কুখ্যাত অপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া গুটিয়ে আসছে৷ দ্রুতই সমস্ত প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারবেন আইনজীবীরা৷ যার জেরে মামলার নিষ্পত্তি করে যথাযোগ্য শাস্তি দেওয়া হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.