সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিলই। এবার সেই আশঙ্কাই বাস্তবায়িত হচ্ছে একেকটি ঘটনায়। মরিশাসের (Mauritius) সমুদ্রে জাপানি জাহাজ দুর্ঘটনার পর সেখানকার জলজীবন বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, সেই আশঙ্কা করেছিলেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই দেখা গেল, উপকূলে ১৭টি বৃহৎ ডলফিনের নিথর দেহ। সমুদ্রের জলে তেল মিশে বিষক্রিয়ার ফলেই তাদের এই পরিণতি বলে মনে করা হচ্ছে। মরিশাসে একসঙ্গে এত সংখ্যক ডলফিনের মৃত্যু অতি বিরল ঘটনা। তাদের দেহ ময়নাতদন্তের পরই বোঝা যাবে, মৃত্যুর আসল কারণ।
জুলাই মাসের শেষদিকে তেল নিয়ে জাপানের বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর রওনা হয়েছিল জাহাজ – এমভি ওয়াকাশিও। মরিশাসের কাছে প্রবাল প্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে জাহাজ দু’ টুকরো হয়ে যায়। জাহাজের প্রায় ৪ হাজার টন তেল মিশতে থাকে সমুদ্রের জলে। মরিশাসের সমুদ্র জলজীবনের (Marine Life) বৈচিত্র্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। স্বচ্ছ জলের নিচে রকমারি প্রাণী ও উদ্ভিদের সমারোহ ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প। আগস্টে এই দুর্ঘটনার পর এত হারে তেল সমুদ্রে মিশে যে জলের বাস্তুতন্ত্রকে বিঘ্নিত করবে, তেমন আশঙ্কার কথা গোড়াতেই প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবে দেখা গেল, শুধু প্রবাল অথবা ক্ষুদ্র সামুদ্রিক জীব নয়, তুলনায় বড় জলজ প্রাণীরাও সমুদ্রের বিষক্রিয়ার সঙ্গে লড়তে পারছে না।
তবে ডলফিনদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন মরিশাসের মৎস্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, দুটি ডলফিনের শরীরে হাঙরের কামড়ের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। ফলে তেলের বিষেই যে তাদের মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। পরিবেশ বিজ্ঞানী সুনীল ডোয়ারকাসিংয়ের কথায়, ”হয় সমুদ্রে মিশে যাওয়া তেলের বিষক্রিয়া অথবা ডুবে যাওয়া জাহাজের টুকরোর ধাক্কায় ডলফিনদের মৃত্যু হয়েছে। এটা সবে শুরু, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীরা আরও বিপদের মুখে পড়বে।” তাঁর আরও আশঙ্কা, হয়ত এই বিপর্যয়ের ফলে সামুদ্রিত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রকৃতির পরিবর্তন হবে। অন্যরকম পরিবেশে অভিযোজনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে নেবে। তবে সেই পরিবর্তন কতটা ইতিবাচক, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.