সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনরোষের বিস্ফোরণ ঘটেছে মায়ানমারে (Myanmar)। বিশেষ করে মান্দালয়ে সেনার গুলিতে সাত বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা যেন আরও বেশি করে তাতিয়ে দিয়েছে মানুষকে। গত দু’মাসে সেনার গুলিতে অন্তত ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবু দমানো যায়নি গণতন্ত্রকামীদের। শুক্রবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিল হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। সাধারণ মানুষের তীব্র প্রতিবাদের সামনেও নিজেদের অনড় অবস্থানই ধরে রেখেছে জুন্টা (Junta)। শনিবারও চলল অবাধ হত্যালীলা। আজ একদিনে মৃতের সংখ্যা ৯১। যা আগের সব নজিরকে ভেঙে দিয়েছে।
মায়ানমারের সেনা আগে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল, যদি গণতন্ত্রকামীরা ফের পথে নামে তাহলে সরাসরি মাথায় গুলি করবে তারা। উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত প্রতিবাদীদের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে মায়ানমার সেনাকে। কিন্তু এই প্রথম সরাসরি এমন হুমকি দিয়েছিল তারা। সেদেশের সরকারি টিভি চ্যানেলেই একথা জানা গিয়েছে। শনিবারও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদের পরিকল্পনা ছিল গণতন্ত্রকামীদের। তার আগেই চ্যানেলে সরাসরি সতর্কবার্তা শোনা গেল, ”আপনাদের জেনে রাখা দরকার, যে কোনও সময় আপনাদের বিপদ আরও বাড়িয়ে মাথায় ও ঘাড়ে গুলি করা হবে।” প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত যতজন মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশকে মাথাতে গুলি করেই হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সেনার হাতে বন্দি নেত্রী আং সান সু কি’র মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। কয়েকদিন আগেই প্রায় ৩২টি চিনা সংস্থার কারখানায় হামলা চালায় জনতা। কারণ, টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনার পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। আর এতেই ক্ষিপ্ত গণতন্ত্রকামীরা। সোমবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান অনেকে। কিন্তু আং সাং সু কি-পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। আর সেই কারণেই নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা। শুক্রবারও পথে নেমে আসা আন্দোলনকারীদের উপরে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.