ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল অনেকদিন ধরেই। এবার অতিমারী থেকে বাঁচার ‘রক্ষাকবচ’ বলে দাবি করা কোভিশিল্ডের (Covishield) ভয়ংকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নিল ওষুধ নির্মাণ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (Astrazeneca)। অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অস্কফোর্ডের এই টিকা ভারতে তৈরি করেছিল পুণের সিরাম ইন্সটিটিউট। ব্রিটেন আদালতে এক মামলার প্রেক্ষিতে সংস্থার তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে এই ভ্যাকসিনের কারণে অতি বিরল থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম বা ‘টিটিএস’ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন রোগী। এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার তরফে জানানো হয়েছে, ‘আমরা সমবেদনা জানাই সেই সব মানুষের প্রতি যারা এই ভ্যাকসিনের কারণে তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে। একইসঙ্গে যারা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরে অসুস্থ। রোগীদের সুরক্ষা সর্বদাই আমাদের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য। ভ্যাকসিন-সহ সমস্ত ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমাদের কঠোর নীতি রয়েছে।’
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিডের টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এমন দাবি করে ব্রিটেন আদালতে প্রথম মামলা দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। দাবি করা হয়, টিকা নেওয়ার পর তাঁর শরীরে অজানা রোগ দেখা দেয়। এরপর ২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাও কমে গেছে জেমি স্কটের। ব্রিটেনের হাইকোর্টে সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দাবি করে ৫১টি মামলা দায়ের হয়। তবে কোনও অভিযোগ মানতে চায়নি সংস্থা।
অবশেষে গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করে এই ভ্যাকসিনের কারণে টিটিএস নামের বিরল রোগের সম্ভাবনা রয়েছে। নথি পেশ করে আদালতে জানানো হয়, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কারণে টিটিএস-এর মতো বিরল রোগ হতে পারে। তবে টিকা না নিলেও থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমের ঘটনা ঘটতে পারে। কী কারণে এমনটা ঘটছে সে বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের বিবেচনার দাবি রাখে।’
জানা যাচ্ছে, এই বিরল রোগে শরীরের নানা জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। কমে যেতে পারে রক্তে প্লেটলেটসের মাত্রা। প্লেটলেটস হল ছোট থোট কোষ যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। রক্তে প্লেটলেটসের মাত্রা কমে তা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। এর ফলে মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা, পেটে যন্ত্রণা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, ফিট হওয়া বা জ্ঞান হারানো, ভাবনাচিন্তা করতে সমস্যা হওয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.