সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইল ইসলামাবাদ। কাশ্মীরে ৩০৭ ও ৩৫এ ধারা বাতিলের কোপ পড়ল সমঝোতা এক্সপ্রেসের উপর। ইসলমাবাদের তরফে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগকারী এই ট্রেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্তের সামনে মাথা নোয়াতে নারাজ নয়াদিল্লি। গোটা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুদ্ধ বিদেশমন্ত্রক। এমন সিদ্ধান্তের ফলে সীমান্ত সন্ত্রাসকে মদত দেওয়া হবে বলেই মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার ঘোষণার আগেই ভারতগামী সমঝোতা এক্সপ্রেস রওনা দিয়েছে। কিন্তু সেই ট্রেনে পাকিস্তানের রেলকর্মীরা ভারতে আসতে অস্বীকার করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, ভারতে গেলে তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন। তাই ট্রেনটিকে ওয়াঘা সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে আসবেন তাঁরা। সেখান থেকে ট্রেনটিকে ভারত ভূখণ্ডে চালিয়ে আনার দায়িত্ব ভারতীয় কর্মীদের উপর দেওয়া হয়েছে। ওয়াঘা সীমান্তে স্টেশন মাস্টার লিখিতভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন৷ এই বদলের জন্য প্রায় দেড় ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় লাগবে।
ভারত ও পাকিস্তানের ঐক্যে জোর দিতে বাজপেয়ীর আমলেই চালু হয় সমঝোতা এক্সপ্রেস। শিমলা চুক্তি অনুসারে, ১৯৭৬ সালের ২২ জুলাই এর যাত্রা শুরু হয়। তখন দিল্লির মসনদে ছিলেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। তারপর একাধিকবার সমঝোতা এক্সপ্রেসের উপর খাঁড়া নেমে আসে। যে কোনও সমস্যা হলেই আগে সমঝোতা এক্সপ্রেস বাতিল করার পথে হাঁটে ইসলামাবাদ। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। কিন্তু এবার ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে।
প্রত্যুত্তরে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের বক্তব্য, ভূস্বর্গ থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে পাকিস্তানের কিছু বলার এক্তিয়ার নেই। বরং নয়াদিল্লির মতে, পাকিস্তানের এমন পদক্ষেপে উৎসাহিত হবে সীমান্ত সন্ত্রাস।
উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারা বিলোপ ইস্যুতে বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকেন ইমরান খান। বৈঠকে ভারতের বিরুদ্ধে পাঁচটি বড় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে পাকিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূতকেও। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আদানপ্রদানও আগের থেকে কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইমরান সরকার জানিয়েছে, আপাতত ভারতের সঙ্গে যাবতীয় বাণিজ্যিক আদানপ্রদান স্থগিত। দুই দেশের যাবতীয় দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নিয়েও পর্যালোচনা করবে পাকিস্তান। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ করা হবে।
এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এক ব্যক্তি। তাঁর আবেদন ছিল, এই মামলার শুনানি দ্রুত শুরু করুক দেশের সর্বোচ্চ আদালত। নাহলে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হতে পারে পাকিস্থান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রামানার বেঞ্চ তাঁকে সাফ জানিয়ে দেয়, ভারতের সংবিধানের উপর ভিত্তি করে কাশ্মীরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ কি পদক্ষেপ নিতে পারে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.