সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের অশান্ত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল। আর্মেনীয় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে আজারবাইজানের ৪ সৈনিকের। এমনটাই দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রক। পালটা আর্মেনীয় মদতপুষ্ট কারাবাখ বাহিনীর দাবি, শনিবার থেকে চলা সংঘর্ষে আজারবাইজানের সেনার হামলায় তাদের ছ’জন সেনা আহত হয়েছে।
বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে প্রায় দু’মাস চলা সংঘর্ষের পর গত নভেম্বর মাসে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে আর্মেনিয়া (Armenia) ও আজারবাইজান (Azerbaijan)। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তির ফলে কালবাজার গ্রাম-সহ নিজেদের দখলে থাক বেশ কিছু এলাকা আজারবাইজানের হাতে তুলে দেয় আর্মেনিয়া। পাশাপাশি, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে কারাবাখ অঞ্চলে ২ হাজার জওয়ানের একটি শান্তিরক্ষী বাহিনীও মোতায়েন করে মস্কো। কিন্তু শনিবার, ফের সংঘর্ষে জড়ায় দুই ফৌজ। উদ্বেগ উসকে সংঘর্ষবিরতির কথা জানায় রাশিয়াও। দুই পক্ষের কাছেই চুক্তি মেনে চলার আবেদন জানিয়েছে পুতিন প্রশাসন। আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনীর দাবি, স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র কারাবাখের সেনাবাহিনীর দখলে থাকা দু’টি গ্রামে শনিবার হামলা চালায় আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। ইয়েরেভান আরও জানায়, ‘Hin Tagher’ ও ‘Khtsaberd’ নামের দু’টি গ্রামে আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর হামলা রুখে দিয়েছে ফৌজ। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আজারবাইজান বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে। এদিকে, ফ্রান্স ও আমেরিকার নেতৃত্বে মিন্স্ক গ্রুপের বৈঠকে আর্মেনিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেন, “আবর লড়াই শুরু করলে আমরা আর্মেনিয়াকে ধ্বংস করে দেব।”
উল্লেখ্য, ৪ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের বিতর্কত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভৌগলিক সীমানার মধ্যেও হলেও আর্মেনীয় বিদ্রোহীদের দখলে। এই অঞ্চলের দখল নিয়ে আর্মেনিয়া-আজাবাইজান মতবিরোধের সূচনা ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সদ্যস্বাধীন দুই দেশের মতবিরোধ গড়ায় সামরিক সংঘাতে। সোভিয়েত জমানায় আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। ১৯৯৪ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে নাগোরনো-কারাবাখ এবং আশপাশের বেশ কিছু অঞ্চল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৬ সালেও ওই এলাকার দখল নিতে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল আজারবাইজান ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.