সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেইরুট বন্দরের বিস্ফোরণের নড়ে উঠেছে লেবানন সরকারের ভিত। দুর্নীতিতে গলা পর্যন্ত ডুবে থাকা শাসকদের বিরুদ্ধে পথে নেমে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে একপ্রকার বাধ্য হয়ে ইস্তফা দিয়েছেন সে দেশের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ।
বিস্ফোরণের জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বেইরুট (Beirut) শহর। বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য আসছে, কিন্তু তা পৌঁছচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরে। এমনই সব অভিযোগ, হাহাকারে উত্তাল শহর। রবিবার ইস্তফা দেওয়ার পর দেশটির তথ্যমন্ত্রী সামাদ সাফ জানান, প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব জনতার আশা পূরণ করতে পারেননি তাই এই সরকারের সঙ্গে তিনি আর থাকতে চান না। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পদত্যাগ করেন লেবাননের পরিবেশমন্ত্রী দামিয়ানস কাট্টার। কিন্তু দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করলেও ক্ষমতা ছাড়ার কোনও ইঙ্গিত দেননি প্রধানমন্ত্রী দিয়াব। একইভাবে ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ রাষ্ট্রপতি মিখেল আউনও।
উল্লেখ্য, প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের দেশ লেবানন ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের দেনায় ডুবে আছে। অথচ, সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো সামান্য পরিষেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। লেবাননের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা নাদিম হুরি অভিযোগ করেন, দেশের শাসক ও রাজনীতিবিদরাই দেশটিকে লুটেপুটে খাচ্ছে। সেই অভিযোগ যে মিথ্যে নয়, তা প্রমাণ করে রবিবার আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (IMF) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সাফ জানিয়েছেন, সরকারের আমূল পরিবর্তন না আনলে ভবিষ্যতে লেবাননকে আরও কোনও ঋণ দেওয়া হবে না।
এদিকে, লেবাননে (Lebanon) ক্রমেই বাড়ছে সরকার বিরোধী আন্দোলন। লেবাননের ম্যারোনাইট গির্জাও সরকারের ক্ষমতানাশের দাবি তুলেছে। তাদের প্রধান বেচারা বুত্রোস আল-রাহিও বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে গলা মেলান। প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি। দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের উপর আস্থা না রেখে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণের কাজ সামলাচ্ছে বেইরুটে। দুর্নীতি এড়াতে ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া-সহ বহু দেশ সাহায্যের অর্থ পৌঁছে দিচ্ছে রাষ্ট্রসংঘের অধীনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিংবা লেবানিজ রেড ক্রসের হাতে। কিন্তু পুরো শহরটাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ। সে কাজে বিশেষ করে সরকারের যথাযোগ্য ভূমিকা প্রয়োজন, যা বর্তমানে অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.