সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের মাটিতে তৎপরতা বাড়ছে চিনা ফৌজের! এবিষয়ে এবার ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিল মার্কিন প্রশাসন।
এই মুহূর্তে আমেরিকা সফরে রয়েছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির। তাঁকে পেন্টাগনের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের মাটিতে চিনের গতিবিধি যেন শুধুমাত্র চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরেই (সিপিইসি) সীমাবদ্ধ থাকে। কোনওভাবেই যেন পাক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বেজিংকে নাক গলানোর সুযোগ না দেওয়া হয়। চিনা হস্তক্ষেপের প্রমাণ মিললে ভবিষ্যতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলেও পাক সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’-এ প্রকাশিত একটি খবরে ইঙ্গিত।
জানা গিয়েছে, মার্কিন কর্তারা পাক সেনাপ্রধানকে বলেছেন , যদি ইসলামাবাদের আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় তবে তাদের ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য-সহ কিছু শর্ত মেনে নিতে হবে। পাকিস্তানকে ভারতের সঙ্গে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনা শুরু করা উচিত এবং বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি বজায় রাখা উচিত’ বলেও বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার এবং তালিবানের ক্ষমতা দখলের পরে এই প্রথম কোনও পাক সেনাপ্রধান সরকারি সফরে ওয়াশিংটনে গিয়েছেন।
শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পাকিস্তানের (Pakistan) মাটিতে চিনা নিরাপত্তা ঘাঁটি বানানোর পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেই পদক্ষেপ করেছে ওয়াশিংটন। পাকিস্তানে কর্মরত চিনা নাগরিকদের জন্য বালুচিস্তানের গদর বন্দরে সামরিক ফাঁড়ি এবং তার যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য গদর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করার দাবি জানানো হয়েছিল। এর পরই গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড ব্লম গোপনে গদর বন্দর পরিদর্শন করেন। সেখানে চিনা সামরিক বাহিনীর গতিবিধি সম্পর্কে নিঃসংশয় হন। তার জেরেই জেনারেল মুনিরকে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের এই হুঁশিয়ারি। গদর বন্দরটি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অংশ। যা ২০১৫ থেকে শুরু করেছে বেজিং।
পাশাপাশি, ২০৩০ পর্যন্ত এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য চিন (China) সিল্ক রোড ফান্ড গঠন করেছে। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পে হাজার হাজার চিনা কর্মী পাকিস্তানের করাচি, বালুচিস্তান, গিলগিট-বালটিস্তানে কাজ করছেন। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ), তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার শিকার হয়েছেন চিনা নাগরিকেরা। তারই জেরে ২০২২ সালে পাকিস্তানের মাটিতে চিনা সেনা ছাউনি তৈরিতে অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদের কাছে ‘আবেদন’ জানিয়েছিল চিনের সরকার। এর পরেই গোপনে পাকিস্তানে চিনা ফৌজের তৎপরতা শুরু হয় বলে অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.