সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাথা নত করেনি পঞ্জশির। উপত্যকার বিস্তীর্ণ এলাকা তালিবানের (Taliban) দখলে এলেও লড়াই চলবে বলে হুঙ্কার দিয়েছেন নর্দার্ন অ্যালায়েন্স-এর নেতা আহমেদ মাসুদ। পাশাপাশি, তিনি অভিযোগ করেছেন যে তালিবান যোদ্ধাদের বেশে পঞ্জশিরে হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।
প্রায় মাসখানেকের লড়াইয়ের পর গতকাল বা সোমবার পঞ্জশির দখল করার কথা ঘোষণা করে তালিবান। শুধু তাই নয়, তালিবানের দাবি, পঞ্জশিরে প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যতম নেতা আহমেদ মাসুদের বাড়িরও দখল নিয়েছে তারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবিও ভাইরাল হয়েছে। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ দাবি করে, “আফগানিস্তানের শেষ প্রদেশ হিসাবে পঞ্জশির এখন আমাদের দখলে। গোটা আফগানিস্তানেরই দখল নিয়েছে তালিবান।” যদিও এই দাবির পাল্টা নর্দার্ন অ্যালায়েন্স জানিয়েছে, মিথ্যা দাবি করছে তালিবান। ‘ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্স অফ আফগানিস্তান’-এর টুইট, ‘তালিবানের পঞ্জশির দখলের দাবি মিথ্যা। এখনও সেখানে প্রতিরোধ বাহিনী রয়েছে। আমরা লড়াই করছি। আমরা আফগানদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যত দিন না স্বাধীনতা ও নিজেদের অধিকার ফিরে পাব ততদিন লড়াই চলবে।’
এহেন পরিস্থিতিতে সোমবার এক ভিডিও বার্তায় বিখ্যাত যুদ্ধপতি আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ বলেন, “পঞ্জশিরে তালিবানের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছি। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চলবে।” পাশাপাশি, তালিবান ও পাকিস্তানের যৌথ ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে এনে মাসুদ জানিয়েছেন, পঞ্জশিরে তালিবানের সঙ্গে হামলা করছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। গতকাল তালিবানের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র ফাহিম দাস্তিকে। তার কিছুক্ষণ পরেই নেটমাধ্যমে ওই ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন মাসুদ। তালিব বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন মাসুদের আত্মীয় আমির সাহিব আহমেদ মাসুদ এবং নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের অন্যতম কমান্ডার সাহিব আবদুল ওয়াদুদ জোহর।
উল্লেখ্য, আজ থেকে নয়, সেই আশির দশক থেকেই আফগানিস্তানের (Afghanistan) সোভিয়েত-বিরোধী লড়াইয়ের মুখ ছিল পঞ্জশির। আফগান মুজাহিদ কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদ ছিলেন সেই আন্দোলনের পুরোধা। সময় দাঁড়িয়ে থাকে না। এই মুহূর্তে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই পঞ্জশিরেরই এক নেতার নাম উঠে আসছে। তিনি আহমেদ মাসুদ। পঞ্জশিরের কিংবদন্তি ‘সিংহ’ আহমেদ শাহ মাসুদের বড় সন্তান। পাক বিমানবাহিনীর এবং তালিবানের হামলায় পঞ্জশির উপত্যকার জনবসতিগুলি হাতছাড়া হয়েছে মাসুদ বাহিনীর। তবে তাজিক যোদ্ধারা হিন্দুকুশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে খবর। সেখান থেকে তালিবান বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন গেরিলা যুদ্ধও চালাতে পারেন তিনি। একই রণকৌশলে আশির দশকে সোভিয়েত সেনার মোকাবিলা করেছিলেন ‘সিনিয়র মাসুদ’। ফলে লড়াই এখনও শেষ হয়নি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.