সুকুমার সরকার, ঢাকা: চার দিন আগের রেশ না কাটতেই ফের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার হিন্দুপল্লিতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে যশোহর ও ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। বৃহস্পতিবার রাত তিনটায় নাসিরনগরের নমশুদ্রপাড়ার ফুলকিশোর সরকার, খোকন বিশ্বাস, অমর দেব, কেশব চক্রবর্তী, সাগর দাসের ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আতঙ্ক ছড়াতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদ।
এর আগে গত রবিবার ফেসবুকে ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগ এনে নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির ভাঙচুর, দেড়শো বাড়িতে লুটপাট ও কয়েকজনকে মারধর করা হয়। ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার সরাজ দাসকে (৩০) ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রসরাজের আইডি থেকে পোস্ট হয়েছে কিনা তা নিয়ে গভীর অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে তদন্ত করছে। অর্থাৎ রসরাজের মতো কম শিক্ষিত, আইটি সম্পর্কে তেমন জ্ঞান না থাকা একজনের পক্ষে এতো নিখুঁত ছবি এডিট করে পোস্ট সম্ভব কিনা, রসরাজের আইডি হ্যাক হয়েছে কিনা, রসরাজের মোবাইলে শেয়ারইট-এর মাধ্যমে ছবিটি এসেছে কিনা-এসব নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করছে পুলিশ। গত ২৯ অক্টোবর শনিবার রসরাজ দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কাবা শরিফের উপর শিবমূর্তি বসিয়ে ছবি পোস্ট করার অভিযোগ ওঠে। এরপর হিন্দুমন্দির, বাড়িঘর এবং দোকানপাটে হামলা –ভাঙচুর-লুটপাট চালানো হয়। এ কাণ্ডে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে যশোহর শহরের কদমতলায় একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের সময় দুই দুষ্কৃতীকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। বুধবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার হয়েছে ধর্মতলার শামিম ও জসিম। বুধবার রাতে ধর্মতলা সর্বজনীন কালীমন্দিরে গীতা পাঠ করছিলেন পুরোহিত সাধন কুমার পাল। এ সময় শামিম ও জসিমের নেতৃত্বে কয়েকজন দুষ্কৃতী পুরোহিতের হাত থেকে ধর্মগ্রন্থ কেড়ে নেয়। এরপর মন্দিরের রাধাকৃষ্ণ, লক্ষ্মী, গণেশ ও মনসা প্রতিমা ভাঙচুর করে। বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন পরিষদ যশোর জেলাশাখার সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাস জানান, প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে শহরের চিত্রা মোড়ে শুক্রবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার রূপাপাত গ্রামের আনন্দবিশ্বাসের বাড়িতে গত বুধবার রাতে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.