সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ৫০ বছর ধরেই বিশ্বের তাবড় বিশেষজ্ঞদের অক্লান্ত পরিশ্রমেও যে রহস্য ফাঁস হয়নি। এবার জোডিয়াক কিলারের সেই ‘কোডেড’ মেসেজের (সাংকেতিক বার্তা) পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছে ক্রিপ্টোগ্রাফারদের একটি দল।
তা কী লেখা ছিল হত্যাকারীর ওই গোপন বার্তায়? গবেষকদের মতে সাংকেতিক বার্তাটিতে হত্যাকারী (Zodiac Killer) লিখেছে, ‘আমাকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেছেন আপনার। আশা করি, এই কাজে অপনারা খুব আনন্দ পাচ্ছেন। তবে আমি গ্যাস চেম্বারকে একটুও ভয় করি না। কারণ এটি আমাকে স্বর্গে পৌঁছে দেবে। আমাকে ধরলেও বিশেষ লাভ হবে না। আমার কাজ করার জন্য অসংখ্য ভৃত্য রয়েছে। আমি খুন করতে ভালবাসি। কারণ এই কাজ আমি উপভোগ করি।’ এই মেসেজের রহস্যভেদ করার দাবি করেছেন আমেরিকার ওয়েব ডিজাইনার ডেভিড ওরানচক। ২০০৬ সাল থেকে এই রহস্য থেকে পর্দা সরাতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন তিনি। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অস্ট্রেলিয়ান গণিতবিদ স্যাম ব্ল্যাক এবং বেলজিয়ামের লজিস্টিশিয়ান জা ভ্যান এয়েকচে। বিশ্লেষকদের মতে, গোপন বার্তা পাঠিয়ে প্রশাসনকে খোলা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল জোডিয়াক কিলার। ওই বার্তাগুলিতে নিজের পরিচয়ও তুলে ধরেছিল সে। যদিও আজও তার পরিচয় অজানা। ১৯৬৯ সালে অর্থার লেই অ্যালেন নামের এক ব্যক্তিকে জোডিয়াক কিলার সন্দেহে জেরা করে পুলিশ। তবে প্রমাণের অভাবে তাঁকে বেকসুর বলে মেনে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ছয়ের দশকের শেষের দিকে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশে হানা দেয় ‘জোডিয়াক কিলার’। শহরের বুকে ঘটে একের পর এক খুন। সরকারি হিসেবে সবমিলিয়ে পাঁচজনকে খুন করা হয়েছিল। তবে সিরিয়াল কিলারের দাবি ছিল, সবমিলিয়ে খুনের সংখ্যা ৩৭। আর এই খুনগুলি করার জন্য রীতিমতো ‘ভৃত্যের দল’ ছিল তাঁর। তবে শত চেষ্টা সত্বেও পুলিশ ও প্রশাসনের দুঁদে কর্তারাও জোডিয়াক কিলারের টিকি ছুঁতে পারেননি না। খুনের কারণও সেই অর্থে জানা যায়নি। এর মধ্যেই ১৯৬৯-এ একটি মার্কিন সংবাদপত্র ‘San Francisco Chronicle’-এর অফিসে পৌঁছয় সিরিয়াল কিলারের বেশ কয়েকটি ‘কোডেড মেসেজ’। কিন্তুওই কোডেড মেসেজের মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারলেন না পুলিশকর্তারা। একদিন, দু’দিন করে কেটে গেল ৫০টা বছর। এর মাঝে দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। এতদিন পর সেই মেসেজের রহস্যভেদ করার দাবি করেছেন আমেরিকার ওয়েব ডিজাইনার ডেভিড ওরানচক। ২০০৬ সাল থেকে এই রহস্যভেদ করার চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অস্ট্রেলিয়ান গণিতবিদ স্যাম ব্ল্যাক এবং বেলজিয়ামের লজিস্টিশিয়ান জা ভ্যান এয়েকচে।
ওরানচক জানিয়েছেন, ওই কোডেড মেসেজে ১৭টি কলমে বিভিন্ন সংকেত ও অক্ষর মিলিয়ে মোট ৩৪০টি ক্যারেক্টার রয়েছে। একে ৩৪০ সাইফারও বলা হয়। এটি আর পাঁচটি কোড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। উপরের বাঁদিক থেকে আড়াআড়িভাবে সংকেতগুলি পড়তে হবে। কিন্তু, কীভাবে এই অসাধ্য সাধন হল? ওরানচক জানিয়েছেন, বিভিন্ন কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কোড লেখার প্যাটার্ন খুঁজে বার করার ফলেই সাফল্য মিলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.