সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেক্স: আফগানিস্তানে তুমুল লড়াই চালাচ্ছে তালিবান (Taliban)। দেশটির প্রায় অর্ধেক দখল করে ফেলেছে জেহাদি সংগঠনটি। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। আর সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয় তা প্রমাণ করে মঙ্গলবার রাতে ভারতের তৈরি সালমা বাঁধে হামলা চালায় তালিবান। যদিও আফগান ফৌজের প্রচণ্ড পালটা মারে রণে ভঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ফাওয়াদ আমান টুইট করে জানান, ‘সালমা বাঁধে তালিবানের হামলা ব্যর্থ হয়েছে। হেরাত প্রদেশের ওই বাঁধটিকে ধ্বংস করতে হামলা চালায় তালিবান। কিন্তু আফগান সেনাবাহিনীর পালটা মারে তাদের প্রচুর ক্ষতি হয় এবং তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।” গত মাসেই সালমা বাঁধ লক্ষ্য করে পর পর রকেট হামলা চালিয়েছিল তালিবান। কিন্তু সেগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ফের হামলা চালানোর চেষ্টা করতেই পালটা হামলার মুখে পড়ে ময়দান ছেড়ে পালায় জঙ্গিরা। শুধু তাই নয়, নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ফাওয়াদ আমান আরও জানিয়েছেন, তালিবানের বিরুদ্ধে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে আফগান সেনাবাহিনী। বুধবার গজনি প্রদেশে লড়াইয়ে খতম হয়েছে ৫০ জন জঙ্গি। জঙ্গি ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে হেলমন্দ প্রদেশেও। সেখানে আফগান ফৌজের হামলা এক পাকিস্তানি আল কায়দা জঙ্গি-সহ নিকেশ হয়েছে বেশ কয়েকজন তালিবান সদস্য। সবমিলিয়ে আফগানিস্তানে হারানো জমি উদ্ধার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে সরকারি বাহিনী বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে হারি নদীর উপর তৈরি সালমা বাঁধ ভারত-আফগানিস্তানের বন্ধুত্বের প্রতীক। ২০১৬ সালে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির সঙ্গে এই বাঁধ উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আফগানিস্তানে পরিকাঠামো নির্মাণে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লগ্নি করেছে নয়াদিল্লি। ওই প্রকল্পের আওতায় সালমা বাঁধ তৈরি করে ভারত। সম্প্রতি আফগান বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে দেশের ১৯৩টি জেলা তালিবান দখল করেছে। এর মধ্যে ১৯টি জেলা পাকিস্তান, ইরান ও উজবেকিস্তান সীমান্তে। সবমিলিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে প্রায় ২০০টি জেলা। প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর দেশটির ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে টাখার, বাদাখশান, হেরাত, ফারাহ ও কুন্দুজে ১০টি বর্ডার ক্রসিং পয়েন্ট দখল করেছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। এপ্রিলের ১৪ তারিখ থেকে এপর্যন্ত তালিবানের সঙ্গে লড়াইয়ে আফগান সেনাবাহিনীর ৪ হাজার সৈনিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৭ হাজার। জঙ্গিদের হাতে বন্দি অন্তত দেড় হাজার জওয়ান। লড়াইয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিগত কয়েক মাসে গৃহযুদ্ধে মহিলা ও শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার নিরীহ মানুষের। আর এই গোটা ঘটনাচক্রে জড়িত পাক সেনা ও আইএসআই। জানা গিয়েছে, তেহরিক-ই-তালিবান, জইশ-ই-মহম্মদ, জামাত-উল-আহরার ও লস্কর ঝাংভির মতো পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি লড়াই করছে আফগানিস্তানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.