ছবি- প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবানি আগ্রাসনে (Taliban Terror) আফগানরা এখন ‘স্বাধীনতাহীন’। ‘দাসত্ব-শৃঙ্খল’ পায়ে পরাটা বোধ হয় সময়ের অপেক্ষা। যদিও খাতায় কলমে এখনও সেভাবে কোনও ফতোয়া জারি করেনি তালিবানরা। বরং, তারা নিজেদের আগের থেকে অনেক বেশি নরম এবং উদারপন্থী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আফগান মাটিতে আগের মতোই চলছে ফতোয়া রাজ। ইসলামিক শরিয়া আইন এবং তার অতিরঞ্জিত একটা ভার্সান ইতিমধ্যেই কার্যকর করা শুরু হয়ে গিয়েছে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে। প্রাণভয়ে কাবুলের রাজপথে আফগানদের ছুটোছুটি কিংবা কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport) কাতারে কাতারে মানুষের প্রাণভয়ে দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা, অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
আসলে, অনেক আফগানের চোখেই এখন ভেসে আসছে ২০ বছর আগের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলির স্মৃতি। ব্যক্তি স্বাধীনতা তালিবান শাসনে ‘সোনার পাথর বাটি’র মতো। আর মহিলাদের নাকি মানুষ বলেই গণ্য করে না কট্টর ইসলামপন্থী এই সংঠনটি। মহিলারা তাঁদের চোখে স্রেফ পণ্য। সম্ভবত সেকারণেই মেয়েদের জন্য একগুচ্ছ ফতোয়া জারি করেছে তালিবানিরা।
কী সেই ফতোয়া (Taliban Fatwa)?
তালিবানি শাসনে নিজের স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কোনও পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনো নিষেধ। পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে বাইরে বেরোলেও বোরখা এবং হিজাব পরাটা বাধ্যতামূলক। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে বোরখার বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
বাড়ির বারান্দায় পা রাখতে পারবেন না মহিলারা। বাড়ির বাইরে বা রাস্তা থেকে যাতে তাঁদের দেখা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে বাড়ির সব কাচের জানলা, দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অফিস কাছারিতে মহিলাদের প্রবেশ একপ্রকার নিষেধ। যদিও প্রকাশ্যে তালিবানদের ঘোষণা, মহিলারাও কাজে ফিরতে পারেন। কিন্তু বেঁচে থাকাটাই যেখানে বিলাসিতা, সেখানে চাকরি বা রোজগারের আশাটাও এখন রাখেন না মহিলারা।
কোনও পুরুষের কানে মেয়েদের পদশব্দ পৌঁছানো যাবে না। মেয়েরা জোরে কথাও বলতে পারবে না। কারণ, অচেনা পুরুষের কণ্ঠে মেয়েদের কণ্ঠস্বর পৌঁছানোটাও নাকি হারাম। মেয়েরা কোনওরকম ছবি তুলতে পারবে না। কোনও দোকানে, বিজ্ঞাপনে মেয়েদের ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
মহিলাদের কোনও রেডিও, টেলিভিশনে বা কোনও সামাজিক জমায়েতে অংশ নেওয়ার অধিকার নেই। মহিলাদের নামে কোনও জায়গার নাম থাকলে সেগুলি পালটে ফেলতে হবে।
এসবের থেকেও ভয়াবহ হল, তালিবানি মহিলারা নিজেদের ইচ্ছামতো জীবন বা যৌনসঙ্গী বাছতে পারবে না। তাদের জীবন বা যৌনসঙ্গী বেছে দেবেন পুরুষরাই। আর যদি কোনও মেয়ের দিকে তালিবান যোদ্ধাদের নজর পড়ে, তাহলে তাদের যৌনদাসী হয়েই কাটিয়ে দিতে হবে জীবন। যদিও, তালিবানরা দাবি করছে, তারা আর আগের মতো কট্টরপন্থী নয়। তাছাড়া ২০ বছর আগের মতো পটভূমিও আফগানিস্তানে নেই। তাই অনেকেই আশায় বুক বাঁধছেন, আগের মতো অতটা দুঃসহ পরিস্থিতি হয়তো এবার হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.