সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশদখলের পর কথা দিয়েছিল মেয়েদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার। বহু বিধিনিষেধের বাঁধনে বেঁধেও নারীদের পুরোপুরি পর্দানশীন করে রাখতেই জোর দেয়নি ‘আধুনিক’ তালিবান (Taliban) বাহিনী। কিন্তু আফগানিস্তান দখল করার পর ফলাও করে সাংবাদিক বৈঠকে বলা কথা মোটেই রাখল না জঙ্গিরা। উত্তর আফগানিস্তানে যৌনদাসী (Sex slave) হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ডেরায় আটকে রাখার পর স্রেফ খারাপ রান্নার অভিযোগে এক যুবতীকে গায়ে আগুন দিয়ে, পুড়িয়ে খুন করে দেওয়ার খবর মিলল।
সদ্যই আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে পালিয়ে আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছেন আয়ুবী নামে এক মহিলা। তিনি বিশ্বজুড়ে মহিলাদের অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করেন। এই মুহূর্তে আফগানি মহিলাদের অধিকার নিয়ে কাজের জন্য কাবুলেই ছিলেন। তবে সে দেশে তালিবানি তাণ্ডবের পর কাজ অসমাপ্ত রেখেই ফিরে যান। তাঁর মাধ্যমেই উত্তর আফগানিস্তানে (Northern Afghanistan) ওই যুবতীকে পুড়িয়ে খুনের এই খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতা থেকে আরও অনেক কথা শুনিয়েছেন, যাতে তালিবানি তাণ্ডবের নজির দেখে শিউড়ে উঠতে হয়, ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
আয়ুবী জানাচ্ছেন, “তালিবান জঙ্গিরা ঘরে ঘরে ঢুকে মহিলাদের রান্না করতে বাধ্য করতে। কোথাও কোথাও আবার ঘরে জমা থাকা খাবার খেয়ে নিচ্ছে। পরিবারের কমবয়সি মেয়েদের জোর করে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। ভাবতে পারেন, ওখানে এক মহিলা দোকান চালান। তালিবান দেশ দখলের পর ওই মহিলাকে দোকানে যাওয়ার জন্য পাশের বাড়ির এক ৪ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিতে হয়েছে। কারণ, মেয়েরা একলা বাড়ির বাইরে বেরতে পারবে না বলে ফতোয়া জারি হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না, ওরা নিজেদের দেওয়া কথার খেলাপ এইভাবে করছে!” তালিবানি তাণ্ডবকে ‘দুঃস্বপ্নে’র সঙ্গে তুলনা করেছে আয়ুবী।
এর আগে আয়ুবীর কথারই প্রতিফলন পাওয়া গিয়েছিল আফগানিস্তানের মহিলা সাংবাদিক শবনম দওরানের কথায়। আফগান সংবাদমাধ্যম RTA Pashto-র সাংবাদিক শবনম। তালিবান আফগানভূম কবজায় আনার পরের দিন সকালে অফিসে গিয়েই তাঁকে শুনতে হয়েছিল আর অফিসে আসতে হবে না। কর্মজীবনে এখানেই দাঁড়ি। সটান বলা হয়েছিল, ”তুমি মেয়ে। যাও নিজের বাড়িতে ফিরে যাও এবার।” শবনম অবাক হয়ে দেখেছিলেন তাঁর পুরুষ সহকর্মীরা দিব্যি অফিসে ঢুকতে পারছেন। কিন্তু তিনি পরিচয়পত্র দেখিয়েও আর প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন না। অর্থাৎ আফগান নারীদের পায়ে সেই বেড়ি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.