সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্তানের খিদে পেয়েছে বুঝতে পারলে মায়ের মন কি শান্ত থাকতে পারে? তা কখনই সম্ভব নয়৷ মায়ের মন তো কেঁদে উঠবেই৷ পক্ষীমাতার পক্ষেও তা সহ্য করা কার্যত অসম্ভব৷ তাই তো সে সারাদিন যা সংগ্রহ করে, তাই সন্তানের খিদে মেটাতে কাজে লাগায়৷ সিগারেটের শেষাংশ হলেও তা মুখে তুলে দেওয়ার আগে দু’বার ভাবে না অবুঝ মা৷ ছানার মুখে খাবার তুলে দেওয়ার এই ছবিই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ তা নিয়ে নেটদুনিয়ায় চলছে জোর আলোচনা৷
কারেন মাসন, যিনি সমাজসেবী এবং চিত্রগ্রাহক হিসাবেও পরিচিত৷ পশু-পাখিরা যেন বড্ড টানে তাঁকে৷ সম্প্রতি ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তিনি৷ সঙ্গে ছিল ক্যামেরা৷ সেখানেই ছোট্ট ছানাকে নিয়ে মা স্কিমার পাখিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন চিত্রগ্রাহক৷ কখনও মা সন্তানকে আদর করছেন আবার কখনও গা পরিষ্কার করে দিচ্ছেন, সেসবই দেখছিলেন তিনি৷ আচমকাই তিনি দেখেন মা পাখি তার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন৷ অবশ্যই তা ক্যামেরাবন্দিও করেছিলেন৷ তবে ছবি তোলার সময় পাখি কী খাওয়াচ্ছে, তা বুঝতে পারেননি চিত্রগ্রাহক৷
বাড়ি ফিরে সেই ছবি দেখার সময় কারেন মাসন বুঝতে পারেন অবুঝ মা পাখি আদতে শিশুর ঠোঁটে সিগারেট তুলে দিচ্ছেন৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি পোস্ট করেন চিত্রগ্রাহক৷ সচেতনতার স্বার্থে তিনি লেখেন, ‘‘সিগারেট খেয়ে এদিক-সেদিকে শেষাংশ ফেলবেন না৷ মা স্কিমার তার ছানার মুখে সিগারেটের শেষাংশ খাবার হিসাবে তুলে দিচ্ছে৷ এবার আমাদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে৷ সমুদ্র সৈকতকে দয়া করে ছাইদানি হিসাবে ব্যবহার করবেন না৷’’ বিভিন্ন ওয়াইল্ড লাইফ গ্রুপে এই ছবিগুলো ছড়িয়ে দেন মাসন৷ এভাবে অসচেতনতার বীজ আমাদের মধ্যে জায়গা করে নিলে খুব তাড়াতাড়ি সমুদ্রের প্রাণী এবং পাখিগুলো ধ্বংসের দিকে চলে যাবে বলেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। মাসনের ছবি দেখে বিরক্ত হন নেটিজেনরা৷ নিন্দায় মুখর হয়েছেন সকলেই৷
অতিরিক্ত গাছ কাটার ফলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য প্রায় বিপন্ন৷ যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ফেলার অভ্যাসও বহুদিন আগেই রপ্ত করে ফেলেছি আমরা৷ তা সমুদ্র হোক কিংবা পর্বতশৃঙ্গ৷ সমুদ্রের জলে ফেলা প্লাস্টিক খেয়ে তিমি মাছের মৃত্যুর মতো নৃশংস ঘটনারও সাক্ষী রয়েছি আমরা৷ গলায় স্ট্র ঢুকে পাখির মৃত্যুও নতুন কিছুই নয়৷ সেই তালিকাতেই নবতম সংযোজন অবুঝ মায়ের মুখে করে সন্তানের খিদে মেটাতে সিগারেটের শেষাংশ তুলে দেওয়া৷ এই ছবি ভাইরাল হওয়ার পর একটাই প্রশ্ন, ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করতে আর কতদিন খোলা চোখে অসচেতন নাগরিক হয়ে থাকব আমরা?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.