সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধ কি কেবল মানুষের হিংসা আর সাম্রাজ্য বিস্তারের নির্লজ্জ প্রয়াসকেই নতুন করে ফুটিয়ে তোলে? কেবলই অসহায় মানুষের দুর্দশা আর সম্পত্তি নষ্টের খতিয়ানই উঠে আসে যুদ্ধ থেকে? তা নয়। এরই সমান্তরালে মানুষের সহমর্মিতা, মানবিকতা ও মমত্বের কাহিনিও থাকে যুদ্ধের নৃশংসতার আড়ালে। ইউক্রেনে (Ukraine) রাশিয়ার (Russia) হামলার পরে তেমনই নানা নজির সামনে এসেছে। তেমনই একজন নেহা। বয়স তাঁর মাত্র ১৭। ডাক্তারির পড়ুয়া হরিয়ানার এই মেয়েটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশে না ফিরে ইউক্রেনে তাঁর বাড়িওয়ালার পরিবারের পাশে থাকার।
গত বৃহস্পতিবার থেকেই ইউক্রেনের আকাশ ঢেকেছে রুশ যুদ্ধবিমানের কালো ছায়া (Russia-Ukraine War)। মুর্হুমুর্হু বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বাড়িঘর। এই পরিস্থিতিতে নিজের বাড়িওয়ালার পরিবারকে ছাড়তে নারাজ নেহা। বাড়ির মালিক এই পরিস্থিতিতে যোগ দিয়েছেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা। সকলেই আশ্রয় নিয়েছেন কিয়েভের এক বাঙ্কারে। তাঁদের ফেলে দেশে ফিরতে নারাজ নেহা।
শনিবার থেকেই ইউক্রেনের আটক ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় নেহারও ফিরে যাওয়ারই কথা। কিন্তু হরিয়ানায় থাকা মা’কে সপ্তদশী জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ফিরবেন না। আসলে এই পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই নেহার। ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে এসে প্রথমে কোথাও থাকার জায়গাই পাচ্ছিলেন না তিনি। পরে কিয়েভে এক ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি ভাড়া আসেন। অচিরেই গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। বিদেশ বিভুঁইয়ে এসে এমন আপনজনের সন্ধান পেয়ে আপ্লুত ছিলেন নেহা। কিন্তু এবার লেগে গেল যুদ্ধ। আর এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ছেড়ে দেশে ফিরতে মন চাইছে না কিশোরীর।
নেহার মা এক স্কুল শিক্ষয়িত্রী। বাবা ছিলেন সেনায়। কয়েক বছর আগে তিনি শহিদ হয়েছিলেন শত্রুর গোলায়। হয়তো সেটাও একটা কারণ যে, যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও দেশে না ফিরে প্রিয় মানুষদের পাশে থাকতেই চাইছেন হরিয়ানার ছাত্রী। তাঁর অনমনীয় সাহস ও সহমর্মিতা দেখে মুগ্ধ সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.