Advertisement
Advertisement

নিয়তির পরিহাস! ৯/১১-তে বাঁচলেও নাইরোবিতে জঙ্গি হানায় হত মার্কিন ব্যবসায়ী

জঙ্গি হামলায় নিহত ২১ জনের মধ্যে ছিলেন চার-পাঁচজন বিদেশি নাগরিক।

9/11 survivor killed in Nairobi
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:January 18, 2019 11:39 am
  • Updated:January 18, 2019 11:47 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছিলেন ৯/১১ জঙ্গি হামলার সময়। কিন্তু শেষরক্ষা আর হ’ল না। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জোড়া টাওয়ারে আছড়ে পড়েছিল আল কায়দা জঙ্গিদের হাতে অপহৃত দু’টি যাত্রীবাহী বিমান। নিউ ইয়র্কের একটা অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গুঁড়িয়ে গিয়েছিল ডেভিড ও নেলসন নামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জোড়া টাওয়ার। নিহত হয়েছিলেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ।

নতুন শতাব্দীতে বিশ্ব ইতিহাসের গতিপথ পালটে দেওয়া এই সন্ত্রাসবাদী হামলা দাগ কেটে গিয়েছে কোটি কোটি মানুষের মনে। সেই হামলার সময় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে কাজ করতেন মার্কিন ব্যবসায়ী জ্যাসন স্পিন্ডলার। ব্যাংকটির নাম ছিল, সলোমন স্মিথ বার্নি ব্যাংক।

Advertisement

[ব্রেক্সিট ভোটে হারলেও আস্থা ভোটে জিতলেন টেরেসা মে]

জ্যাসনের সহকর্মী কেভিন ইউ জানান, ‘সেদিন টাওয়ার ভেঙে পড়ার আগে পর্যন্ত জ্যাসন বহুজনকে টেনে নিয়ে বাইরে বেরনোর ও বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন। সেদিন আমরা দু’জনেই প্রথমে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হচ্ছে। পরে বিস্ফোরণ, আগুন, ধোঁয়া দেখে বুঝতে পারি ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটেছে। পরে আমরা যখন দশ তলা থেকে কোনওক্রমে বাইরে আসি তখনই বিপর্যয় ঘটে। ভেঙে পড়ে জোড়া টাওয়ার। কিন্তু ধুলো ধোঁয়ার মধ্যেও কংক্রিটের চাঙড় সরিয়ে পাঁচজনকে বের করেছিলেন জ্যাসন। তিনি বরাবরই ডাকাবুকো আর লড়াকু ছিলেন।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, নিউ ইয়র্ক ল’ স্কুলের ছাত্র জ্যাসন পরে একাধিক সংস্থায় কাজ করেছিলেন। কাজ করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার পেরুতে। কেভিন ইউ জানান, কয়েক বছর পরে আই-ডেভ নামে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত পরামর্শদাতা কোম্পানি খোলেন জ্যাসন। তাঁর এই উদ্যোগ প্রচণ্ড সফল হয়। বিদেশে বরাত পেতে শুরু করেন তিনি। ফুলে ফেঁপে ওঠে পসার।

এনবিসি ও সিএনএনকে কেভিন জানিয়েছেন, কেনিয়ায় বিদ্যুৎ সংকট দূর করতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বহুজাতিক সংস্থার পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করছিলেন জ্যাসন। থাকতেন অভিজাত দুসিত-ডিটু হোটেলে। জঙ্গি হামলায় নিহত ২১ জনের মধ্যে ছিলেন চার-পাঁচজন বিদেশি নাগরিক। এঁদেরই একজন হলেন জ্যাসন স্পিন্ডলার। সামনের সোমবারই জন্মদিনে তাঁর কেক কাটার কথা ছিল। পা দিতেন একচল্লিশে। তার আগেই অকালে চলে গেলেন তিনি। তাঁর মরদেহ আমেরিকায় আনার তোড়জোড় চলছে। ৯/১১ তে আল কায়দার আঘাতকে এড়াতে পারলেও, আল শাবাব জঙ্গিদের গুলি-বোমা এড়াতে পারলেন না সম্ভাবনাময় ব্যবসায়ী জ্যাসন।

এদিকে, আল শাবাব জঙ্গিদের খতম অভিযানে অংশ নিয়ে সুপারহিরোর মর্যাদা পাচ্ছেন একজন শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ কমান্ডো। ব্রিটিশ ও আফ্রিকান সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, টিভি ক্যামেরার লাইভ টেলিকাস্টে ও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নীল জিন্স, বেগুনি জাম্পার, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা একজন বড়সড় চেহারার ব্যক্তি কেনীয় সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চড়ছেন। মুখ বালাক্লাভায় ঢাকা ছিল বলে তাঁর চেনা যায়নি। তাঁর কোমরে গোঁজা গ্লক পিস্তল। গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, গলায় বুলেটের চেন এবং আরেক হাতে একে ৫৬ রাইফেল। হাত তুলে ছুটে ছুটে গিয়ে কেনীয় কমান্ডোদের পজিশন নিতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন। কখনও নিজেই উঠে গিয়ে টানা গুলি ছুঁড়ছিলেন। তাঁকে বাঁচাতে মাঝেই মাঝেই কভার ফায়ার করছিলেন কেনীয় কমান্ডোরা। এই ফাঁকে তিনি এক এক করে আটকে পড়া বহু পর্যটক ও হোটেলকর্মীকে বের করে নিয়ে আসছিলেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (স্যাস)-এর বহু বছর ধরে কর্মরত সিনিয়র কম্যান্ডিং অফিসার। সন্ত্রাস দমনে কেনীয় কমান্ডোদের প্রশিক্ষণ দিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নাইরোবিতে আছেন। হামলার সময় শপিং করতে বেরিয়েছিলেন।

[লক্ষ্যপূরণে ‘ব্যর্থ’, কর্মীদের এমনই শাস্তি দিল চিনা সংস্থা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement