সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন আগে সৌদি আরবের দুটি তেল কারখানায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। এর জেরে হওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে স্থগিত হয়ে যায় ওই দুটি কারখানার কাজকর্ম। প্রথমে এই হামলার জন্য ইরানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল সবাই। এর ফল ইরানকে ভুগতে হবে বলে হুমকিও দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই অবশ্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর ওই দুটি কারখানায় হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে ইয়েমেনের হাউতি জঙ্গিগোষ্ঠী। তখন থেকেই সৌদি আরব এর বদলা নেবে বলে জল্পনা চলছিল। মঙ্গলবার তা সত্যি হল। দক্ষিণ ইয়েমেনের দালেহ প্রদেশের দুটি জায়গায় বিমান হামলা চালাল সৌদির মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা। এর ফলে এখনও পর্যন্ত সাতটি শিশু-সহ কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জখম হয়েছে আরও ন’জন।
ইয়েমেন প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, দালেহ প্রদেশের দুটি আবাসনে বিমান হামলা চালায় সৌদি আরবের মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা। এর ফলে সাত শিশু ও মহিলা-সহ কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছে আরও ন’জন। ইব প্রদেশের আল থাওরা হাসপাতালের এক ডাক্তার জানান, বিমান হানায় মৃতদের দেহ এই হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মধ্যে সাতটি শিশু ও চারজন মহিলা রয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার পরেই এর তীব্র নিন্দা করে ইরানের মদতপুষ্ট ইয়েমেনের হাউতি জঙ্গিগোষ্ঠী। নিজেদের আল মাসিরা টেলিভিশনের মাধ্যমে সৌদি আরবের মদতপুষ্ট বিদ্রোহীদের ইয়েমেনের মানুষের উপর ধারাবাহিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়। যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি সৌদি আরব বা তাদের মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা।
২০১৫ সালে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ইয়েমেন সরকারের সমর্থনে এগিয়ে আসে সৌদি আরব। তারপর থেকে সৌদির মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। এর ফলে এই দেশের ২ কোটি ১ লক্ষ বা দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। যার ফলে রাষ্ট্রসংঘের তরফে ইয়েমেনকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ইয়েমেনে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে, তার জেরে কয়েক কোটি মানুষ প্রায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সমাজসেবীরা খাবার এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও পৌঁছে দিতে পারছেন না সাধারণ মানুষের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.