সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে নিপীড়নের মাত্রা কতটা ভয়াবহ তা প্রকাশ্যে এসেছে এক সমীক্ষায়। সেখানে বলা হয়েছে, দেশটিতে হওয়া মোট ধর্মান্তকরণের ঘটনার ৫২ শতাংশই ঘটেছে পাঞ্জাব প্রদেশে।
সম্প্রতি, Center for Social Justice (CSJ) নামে এক সংগঠন অনলাইনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। ‘ফোর্সড কনভারসন কমপ্লেন্টস অ্যান্ড রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ শীর্ষক আলোচনায় উঠে আসে ভয়াবহ তথ্য। জানা যায়, সংখ্যালঘু মহিলা বিশেষ করে নাবালিকাদের ধর্মান্তরণের হার সবচেয়ে বেশি পাঞ্জাব প্রদেশে। মহিলা, বিশেষ করে অপ্রা্প্তবয়স্ক মেয়েরা সবচেয়ে বেশি ধর্মান্তরণের শিকার। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি লঙ্ঘন করে পঞ্জাব প্রদেশে ধর্মান্তরণের ঘটনা আকছার ঘটে। ২০১৩ থেকে ২০২০ এই ৭ বছরে ১৬২টি ক্ষেত্রে জোর করে ধর্মান্তরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের ধর্মান্তকরণের বিষয়ে পঞ্জাবের পরেই রয়েছে সিন্ধ প্রদেশ। ৪৪ শতাংশ ক্ষেত্রে ধর্মান্তরণের ঘটনা ঘটে এখানে। খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে ১.২৩ শতাংশ এবং বালুচিস্তানে ০.৬২ শতাংশ ধর্মান্তরণ হয় বলে জানাচ্ছে সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিস বা সিএসজে-র পরিসংখ্যান। গত সাত বছরে বাহাওয়ালপুরে ২১টি এমন ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া, লাহোর, করাচির মতো শহরেও ঘটছে নিপীড়নের এহেন ঘটনা। লাহোরে ১৪টি, করাচিতে ১২টি, ফয়সালাবাদে ১০টি, হায়দরাবাদে ৮টি এবং থারপারকার, ঘটকি এবং কাসুতে ৬টি করে এমন ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক দুনিয়ার একটি নামী পত্রিকা দ্য স্পেক্টাটর (The Spectator) সম্প্রতি পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে পাকিস্তানের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকেই হাতিয়ার করেছিল তারা। আর তার ভিত্তিতে উল্লেখ করেছে, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একজন নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার রক্ষার বিষয়ে একটি রাষ্ট্রের যে কর্তব্য হওয়া উচিত। পাকিস্তান তাতে গুরুত্ব দেয় না। কোনও নির্দেশই সেখানে মানা হয় না। পাকিস্তানে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় হিংসার ঘটনা ঘটে। প্রতিবছর প্রচুর ক্রিশ্চান ও হিন্দু মেয়েকে অপহরণের পরে জোর করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়। তারপর মুসলিম সম্প্রদায়ের পুরুষদের সঙ্গে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই বিষয়ে সবকিছু জানা সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেয় না ইমরানের প্রশাসন। পাকিস্তানের বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতারাও আড়াল থেকে উসকানি দিয়ে অমুসলিম নাগরিকদের জীবন দুর্বিসহ করে তোলে। গত সপ্তাহেই চার জন হিন্দু ও তিনজন ক্রিশ্চান মেয়ে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.