সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের এক বছর পেরিয়ে গেলেও গাজায় আক্রমণের ধার এতটুকু কমায়নি ইজরায়েল। প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের নাম মুছে ফেলতে এখনও আগুন ঝরাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। রবিবার তারা ভয়ংকর আঘাত হানে গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির-সহ একাধিক জায়গায়। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪১ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে ১৩টি শিশুও। এমনটাই দাবি গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। এখন গাজায় হামাসের পাশাপাশি লেবাননেও হেজবোল্লার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে ইজরায়েলকে। ইহুদি দেশটির সঙ্গে সংঘাত তীব্র হয়েছে ইরানেরও। এই পরিস্থিতিতে তেল আভিভকে শক্তিশালী মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। ইজরায়েলে পাঠানো হবে মার্কিন সেনাও।
গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। অভিযান শুরু করার পর থেকে ইহুদি দেশটির সেনার অভিযোগ ছিল, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির ও ধর্মীয়স্থানে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সেখান থেকেই তাঁরা নানা সন্ত্রাসী কাজকর্ম করছে, সেনার উপর হামলা চালাচ্ছে। ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে এই অভিযোগের স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এএনআই সূত্রে খবর, রবিবার গাজার আল আওদা, আল আকসা হাসপাতাল ও নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পের আল মুফতি হাসপাতালে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে বোমাবর্ষণে মৃত্যু হয় ২২ জনের। ক্যাম্পটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ৫ হাজার ঘরছাড়া মানুষ।
এদিকে, সংঘাত পরিস্থিতিতে ফের ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘বন্ধু’ আমেরিকা। হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লার মৃত্যুর বদলা নিতে ইহুদি দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। যার বদলা নেওয়ার ‘নীল নকশা’ তৈরি করছে তেল আভিভ। কীভাবে ইরানে আঘাত হানবে তারা তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু এর আগেই রবিবার ইজরায়েলকে টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (THAAD) ব্যাটারি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এটি একটি শক্তিশালী মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। এছাড়া মার্কিন সেনাও পাঠাবেন তিনি। কিন্তু বাইডেনের এই ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ইরান। আমেরিকাকে এই সংঘাতে না জড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।
উল্লেখ্য, ইজরায়েলের বুকে হামাসের হামলার বর্ষপূর্তির অতীত স্মরণ করিয়ে এবছরের ৭ অক্টোবর দেশের সেনাকে উজ্জীবিত করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, “আমরাই জিতব। গাজাতে জিতব, লেবাননে জিতব। ইরানেও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শত্রুদের গুঁড়িয়ে দাও, একেবারে ধ্বংস করে দাও। আজ থেকে এক বছর আগে আমরা ভয়ানক ধাক্কা খেয়েছিলাম। কিন্তু গত ১২ মাসে সেই ছবিটাকে আমরা সম্পূর্ণরূপে পালটে দিয়েছি।” অন্যদিকে, এই দিনকে আনন্দের সঙ্গে স্মরণ করতে দেখা যায় হামাসকে। ৭ অক্টোবরের হামলাকে গর্বের দিন বলে উল্লেখ করে হামাস জানায়, এই দিনটি প্যালেস্টাইনের নিরাপত্তায় এক ঐতিহাসিক দিন। এখনও পর্যন্ত তাদের ডেরায় বন্দি রয়েছেন ইজরায়েলের শতাধিক মানুষ। যাঁদের খুঁজতে গাজায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.