সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত আগস্টে তালিবান (Taliban) আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করার পর সেখানে ফিরে এসেছে অন্ধকার যুগ। তারপর থেকেই দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায় আফগানদের মধ্যে। জেহাদিদের রক্তচক্ষু এড়াতে যেনতেন প্রকারেণ সীমান্ত ছাড়তে মরিয়া সেদেশের নাগরিকরা। বুধবার ‘নরউইজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল’ তথা এনআরসি এমন এক তথ্য দিয়েছে তা রীতিমতো চোখ কপালে তোলার মতো। ওই সংগঠনের দাবি, প্রতিদিন অন্তত ৪ থেকে ৫ হাজার আফগান কাঁটাতার পেরিয়ে ইরানে অনুপ্রবেশ করছেন। এযাবৎ কেবল ইরানেই আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৩ লক্ষ আফগান!
সামনেই শীত। আর এই সময়ে আরও বেশি সংখ্যক আফগান ইরানে অনুপ্রবেশ করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইরানের উপরে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তার উল্লেখ করে ‘নরউইজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল’ জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সাহায্য একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় সেদেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাউন্সিলের সাধারণ সচিব জান ইগেল্যান্ড জানিয়েছেন, ”এই সামান্য ক্ষমতায় ইরানের পক্ষে খুব বেশি আফগানকে আর আশ্রয় দেওয়া কঠিন। অবিলম্বে, ভয়ংকর রুক্ষ শীতকাল শুরু হওয়ার আগেই আফগানিস্তান ও ইরানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিকে সাহায্য করা তাই একান্ত জরুরি।” সেই সঙ্গে অসহায় আফগানদের সাহায্য করার জন্য ইরান প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছে সংগঠনটি।
তালিবান আফগানভূমে দখলদারি শুরুর পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ আফগানদের মধ্যে। তবে সব থেকে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মহিলারা। প্রায় দুই দশক ধরে গণতন্ত্রের খোলা হওয়ার পর ফের আফগানভূম ঢেকে গিয়েছে মৌলবাদের কালো মেঘে। আর আশঙ্কা সত্যি করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে মেয়েরা পড়াশোনা করলেই কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে তালিবান। স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক ও পড়ুয়া উভয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদিরা। কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের উপর নেমে এসেছে খাঁড়া। ফতোয়ার রক্তচক্ষুর সঙ্গেই রয়েছে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মতো বিষয়ও। রাষ্ট্রসঙ্ঘের হিসেব বলছে, আফগানিস্তানের প্রায় ৪ কোটি নাগরিকদের মধ্যে অন্তত ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ প্রবল খাদ্য সংকটে ভুগতে শুরু করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে যে কোনও ভাবেই দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বহু আফগান। নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে দিয়ে শরণার্থীর জীবন গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত দেশছাড়া আফগানদের ৯০ শতাংশকেই আশ্রয় দিয়েছে পাকিস্তান ও ইরান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.