সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধ থামানোর পথ খুঁজতে আন্তর্জাতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। কিন্তু কিছুতেই থামছে না রক্তপাত। গাজায় হামলা জারি রেখেছে ইজরায়েলি ফৌজ। এবার দক্ষিণ গাজার সেফ জোনে হামলা চালিয়েছে তারা। ইজরায়েলের ‘অগ্নিবর্ষণে’ সেখানে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪০ জনের! এমনটাই দাবি হামাস ও গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। তবে পালটা দাবি করে ইজরায়েল জানিয়েছে, ওই এলাকায় হামাস জঙ্গিদের কমান্ড সেন্টার ছিল। জেহাদিদের জাল ছিঁড়তেই অভিযান চালানো হয়েছিল।
গত ১১ মাস ধরে হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। অভিযান শুরু করার পর থেকে ইহুদি দেশটির সেনার অভিযোগ ছিল, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থান ও শরণার্থী শিবিরে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সেখান থেকেই তাঁরা নানা সন্ত্রাসী কাজকর্ম করছে, সেনার উপর হামলা চালাচ্ছে। ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে এই অভিযোগের সাপেক্ষে যুক্তিও দিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। রয়টার্স সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনুস ও আল-মাওয়াসি শহরে ভয়ংকর আঘাত হানে ইজরায়েলি সেনা। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওই এলাকাগুলোকে সেফ জোন হিসাবে চিহ্নিত করে শরণার্থী শিবির তৈরি করা হয়েছিল। আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ১০ হাজারের উপর প্যালেস্তিনীয়। এদিন হামলায় সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪০ জন। আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৬০।
এনিয়ে গাজার সিভিল ডিফেন্সের এক আধিকারিক মহম্মদ আল-মুগাইর সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, “রাতভর ইজরায়েলি সেনা হামলা চালিয়েছে। নিহত হয়েছেন ৪০ জন। ৬০ জন আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ১৫ জন। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে আমাদের উদ্ধারকারী দল। ২০ থেকে ৪০টি তাঁবু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।” এই হামলা নিয়ে মুখ খুলেছে ইজরায়েলও। তাদের দাবি, দক্ষিণ গাজার ওই অঞ্চলগুলোতে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সেখানকার একাধিক স্কুলে কমান্ড সেন্টার রয়েছে জেহাদিদের। তাই এই অভিযান চালানো হয়েছিল। ফলে যতদিন যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাজায় মৃতের সংখ্যা।
বলে রাখা ভালো, ইহুদি দেশটির ‘মারে’ কোণঠাসা প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠনটি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে খুঁজে খুঁজে নিকেশ করা হচ্ছে জেহাদিদের। বহুদিন ধরেই যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে চাইছে হামাস। এবার সংঘাত থামাতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকার কাছে আর্জি জানিয়েছে তারা। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আর অন্ধ হয়ে থাকবেন না। এবার ইজরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করুন।” এদিকে, গাজায় যুদ্ধ থামানোর জন্য মধ্যস্থতা করছে সৌদি আরব, মিশর, কাতারের মতো দেশ। উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন। একাধিকবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি বৈঠকে যোগ দিয়েছে হামাস ও ইজরায়েলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু কোনওবারই যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হতে পারেনি দুপক্ষ। কারণ পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে একাধিক শর্ত চাপিয়েছে হামাস। যা মেনে নেয়নি তেল আভিভ। এখনও নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় রয়েছেন নেতানিয়াহু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.