সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর দেশের এক অফস্পিনার ‘দুসরা’ ডেলিভারিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সাকলিন মুস্তাক। সাকলিনের অগ্রজ ইমরান খানের ‘উইকেট’ ভাঙল চার মহারথীর ‘দুসরা’য়। শনিবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন ১৯৯২ সালের বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান (Imran Khan)। গত এক সপ্তাহ ধরে চলা নাটকের অবসান হয়েছে শনিবার। বিরোধীদের ‘দুসরা’ বোঝার আগেই বোল্ড হয়েছেন ‘কাপ্তান’। আর তাঁকে ‘আউট’ করার নেপথ্য চার কারিগরের নাম উঠে আসছেন। আবার এই চারজনের উপরই নির্ভর করছে পাকিস্তানের (Pakistan) পরবর্তী সরকারের ভাগ্য। কে এই চারজন?
শাহবাজ শরিফ ( Shehbaz Sharif)
পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা রাজনীতিবিদ। তাঁর অন্য একটি পরিচয়ও রয়েছে। পাকিস্তানের চারবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই তিনি। বছর সত্তরের পাকা মাথার এই রাজনীতিবিদ পাঞ্জাব প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও বটে। বর্তমানে পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল নওয়াজপন্থী মুসলিম লিগের প্রধান। ৭ দিন ব্যাপী চলতে থাকা নাটকে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর।
শিল্পপতি পরিবারের ছেলে শাহবাজ দেশের অন্দরে কঠোর প্রশাসক হিসেবেও পরিচিত। আবেগপ্রবণ অথচ শক্তিশালী বক্তৃতাও তাঁকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে। বক্তৃতার মধ্যে মাঝেমধ্যে কবিতা উদ্ধৃত করা তাঁর অভ্যেস।
আসিফ আলি জারদারি (Asif Ali Zardari)
পাকিস্তানের শিল্পপতি পরিবারের সন্তান। একাধিক বিবাহ, বেহিসেবি জীবনযাপন, দুবাই-ব্রিটেনের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের জন্য তিনি বিভিন্ন সময় খবরে এসেছেন। সম্বন্ধ করে বেনজির ভুট্টোর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তার পরেই পাকিস্তানের গদিতে বসেন বেনজির। কিন্তু পাচার, দুর্নীতি এবং খুনের অভিযোগে দু’বার জেল খেটেছেন আসিফ। তার পরেও তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাঁটা পড়েনি। ইমরানকে গদিচ্যুত করতে বড় ভূমিকা ছিল তাঁরও।
২০০৭ সালে বেনজির ভুট্টোর মৃত্যুর পর ৬৭ বছর বয়সে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি পদে বসেন আসিফ। এক বছরের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন তিনি।
বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি (Bilawal Bhutto Zardari)
বেনজির ভুট্টো এবং আসিফ আলি জারদারির ছেলে। মায়ের মৃত্যুর পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি হন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা তাঁর। মায়ের মতোই প্রগতিশীল। প্রায়শই নারী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন তিনি। ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাঁর ভূমিকাও কম নয়। নেটদুনিয়ার ব্যাপক জনপ্রিয় বিলাওয়াল যে পাকিস্তানে নতুন সরকার গড়তে বড় ভূমিকা নেবেন, তা বলাইবাহুল্য।
মৌলানা ফজলুর রহমান (Maulana Fazlur Rehman)
ইসলামের কট্টরপন্থী সমর্থক হিসেবেই রাজনৈতিক জীবন শুরু। পরবর্তীকালে অবশ্য অবস্থান বদল করেন। আপাতত নমনীয় ভাবমূর্তির জন্যই পরিচিত হন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষ ও বাম দলগুলির জোটও করেছেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন জামিয়াতুল উলেমা-ই-ইসলাম (এফ) সরকার গড়ার অন্যতম কারিগর হতে পারে।
ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর শত্রুতা বহুদিনের। জেমাইমা গোল্ডস্মিথের সঙ্গে তাঁর বিয়ের প্রসঙ্গ তুলে ইমরানকে ‘ইহুদি’ বলেন। দুর্নীতির জন্য তাঁকে ‘মোল্লা ডিজেল’ বলে পালটা কটাক্ষ করতেন ইমরান।
এই চার মহারথীর দুসরায় রাজনীতির পিচে ক্লিন বোল্ড হলেন ‘কাপ্তান’ ইমরান খান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.