সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার লন্ডনের এসেক্সে ৩৯টি মৃতদেহ সমেত একটি ট্রাক উদ্ধার করে পুলিশ। উল্লাস মুখর শহরটি কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় আতঙ্কে। বন্ধ কন্টেনারে কাদের লাশ? তার এল কোথা থেকে? কেনই এহেন নারকীয় পরিস্থিতিতে প্রাণ দিতে হল হতভাগ্যদের? উঠছে এমন প্রশ্নই। এদিকে, তদনীতের অগ্রগতির সগয়ে উঠে আসছে একের পর এক হাড়হিম করা তথ্য।
বৃহস্পতিবার লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশ জানায়, ৩৯ জন মৃতের প্রায় সবাই চিনা নাগরিক। ইতিমধ্যে দেশের চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। চিনা বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ব্রিটেনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বেলজিয়াম পুলিশের কাছেও eই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে সে দেশের চিনা দূতাবাস। তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃতদেহ ভরতি কন্টেনারটি চিন থেকে প্রায় ৫ হাজার মাইল সফর শেষ করে বেলজিয়াম হয়ে জলপথে পূর্ব লন্ডনে ঢুকেছিল। কন্টেনারটি দুবার ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিল। দীর্ঘযাত্রা পথই স্পষ্ট বলে দেয় যে বেশ কয়েকদিন ধরেই কন্টেনারটির ভিতরে বন্ধ ছিল হতভাগ্য চিনা নাগরিকরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় ও অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারের সময় মৃতদেহগুলি জমে কাঠ হয়ে ছিল। তদন্তকারীর মনে করছেন, চিন থেকে মানব পাচারকারীদের সহজয়ে অবৈধভাবে লন্ডনে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন চিনা নাগরিকরা। তবে আসন্ন ব্রেক্সিটের দরুণ সীমান্তে কড়া নজরদারির জেরে সময়মতো লন্ডনে পৌঁছাতে পারেনি ট্রাকটি। ফলে প্রাণ দিতে হয় ভিতরে বন্ধ ৩৯ জনকে। বুধবারই ট্রাকটির ড্রাইভার ২৫ বছরের মো রবিনসনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও ট্রাকটির ভিতর মৃতদেহ দেখে ভিরমি খেয়ে জ্ঞান হরিয়েছিল সে। ফলে মানব পাচারের বিষয়ে বিশেষ কিছু সে জানে বলে আশা করছেন না গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে আরও একটি লরির ভেতর থেকে পাওয়া যায় নয় জনকে। তবে এক্ষেত্রে সবাইকেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্টে এম২০ সড়কে লরিটিকে আটকানো হয়। লরির কন্টেনারের মধ্যে থেকে নয় জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারা ‘অভিবাসী’ বলে জানা গিয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লরিটিকে আটক করলে কন্টেনার থেকে নয় অভিবাসীর খোঁজ মেলে। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অভিবাসন দফতরে এদের পাঠানো হয়েছে। পরপর দু’দিনে একই ধরনের ঘটনায় তাজ্জব গোটা দেশ। তবে লন্ডনে চিনা অনুপ্রবেশ এই প্রথম নয়। কারণ, এর আগে ২০০০ সালে ৫৮ চিনের নাগরিককে ডোভার এলাকা থেকে ট্রাকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ট্রাকের মধ্যে মিলল ৩৯টি মৃতদেহ, আতঙ্কে স্তব্ধ লন্ডন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.