সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় জারি ‘হত্যাযজ্ঞ’। হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধের ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও থামেনি রক্তপাত। ইজরায়েলি সেনায় হামলায় বুধবার প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৪ জন! হামাস জঙ্গিদের নিকেশ করতে রাষ্ট্রসংঘের একটি স্কুল ও দুটি বাড়িতে বোমাবর্ষণ করেছিল তেল আভিভ। এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের জেরে ঘরবাড়ি হারিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু প্যালেস্তিনীয়। ইজরায়েলের হামলায় স্কুলটির ৯০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
গাজায় যুদ্ধ থামানোর পথ খুঁজতে আন্তর্জাতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। কিন্তু কিছুতেই থামছে না মৃত্যুমিছিল। হামলা জারি রেখেছে ইজরায়েলি ফৌজ। অভিযান শুরু করার পর থেকে ইহুদি দেশটির সেনার অভিযোগ ছিল, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থান ও শরণার্থী শিবিরে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। তাই এই জায়গাগুলোতে আঘাত হানছে তেল আভিভ। রয়টার্স সূত্রে খবর, এদিন গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের আল-জাউনি প্রিপারেটরি বয়েজ স্কুলে ‘অগ্নিবর্ষণ’ করে ইজরায়েলি ফৌজ। আক্রমণ শানায় সেখানকার দুটি বাড়িতেও। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ১৯ জন মহিলা-সহ ৩৪ জনের। প্রাণ গিয়েছে নিষ্পাপ শিশুদেরও। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী আহতের সংখ্যা ১৮। এই ঘটনার পর ইজরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী দাবি করে যে, ওই স্কুলে হামাস জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল। তাদের নাশকতার ছক ভেস্তে দিতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনুস ও আল-মাওয়াসি শহরে ভয়ংকর আঘাত হেনেছিল ইজরায়েলি সেনা। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওই এলাকাগুলোকে সেফ জোন হিসাবে চিহ্নিত করে শরণার্থী শিবির তৈরি করা হয়েছিল। আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ১০ হাজারের উপর প্যালেস্তিনীয়। ওই হামলায় সেখানে মৃত্যু হয় অন্তত ৪০ জনের। উল্লেখ্য, গাজার পাশাপাশি এখন ইজরায়েল ভয়ংকর হামলা চালাচ্ছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়াই চলছে ইজরায়েলি সেনার। তেল আভিভের অভিযোগ, বহু হামাস জঙ্গি গাজা থেকে পালিয়ে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের নানা শহরে ঘাঁটি গেরেছে। তাই তাদের খতম করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। হামাস, ফাতাহ ও ইসলামিক জেহাদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো রয়েছে তেল আভিভের নিশানায়। ইজরায়েলের গুলিতে নিকেশ হয়েছে বেশ কয়েকজন প্যালেস্তিনীয় বন্দুকবাজও।
বলে রাখা ভালো, ইহুদি দেশটির ‘মারে’ কোণঠাসা প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে খুঁজে খুঁজে নিকেশ করা হচ্ছে জেহাদিদের। তাই বহুদিন ধরেই যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে চাইছে হামাস। এবার সংঘাত থামাতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকার কাছে আর্জি জানিয়েছে তারা। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আর অন্ধ হয়ে থাকবেন না। এবার ইজরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করুন।” এদিকে, গাজায় যুদ্ধ থামানোর জন্য মধ্যস্থতা করছে সৌদি আরব, মিশর, কাতারের মতো দেশ। উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। কিন্তু এখনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.