ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৬ সাল থেকে সৌদি আরবে (Saudi Arabia) জেলবন্দি ছিলেন কেরলের (Kerala) এক বাসিন্দা। ২০১৮ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন বহু সাধারণ মানুষ। তাঁর মুক্তির জন্য রীতিমতো ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ করে ৩৪ কোটি টাকা জোগাড় করে ফেললেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী কেরলের বাসিন্দারা।
২০০৬ সালে এক ১৫ বছরের কিশোরের হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হন আবদুল রহিম নামের ওই ব্যক্তি। এর পর ২০১৮ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়। যদিও পরে সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সেদেশের শীর্ষ আদালত। গত বছর নিহত কিশোরের পরিবার জানায়, তারা আবদুলকে ক্ষমা করতে রাজি আছে। তবে ৩৪ কোটি টাকার বিনিময়ে। ১৬ এপ্রিল তারিখটি ঠিক হয় ‘ডেডলাইন’ হিসেবে। কিন্তু আবদুলের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। তাদের ক্ষমতা ছিল না ওই টাকার ছিটেফোঁটাও জোগাড় করার। পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই ২০০৬ সালে গাড়ির চালকের চাকরি নিয়ে সৌদি গিয়েছিলেন আবদুল। এর পরই এগিয়ে আসেন কোঝিকোড়ে আবদুলের এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ‘সেভ আবদুল রহিম’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেন। সেই অ্যাপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হতে থাকে তাঁকে বাঁচানোর ‘ব্লাড মানি’। যদিও তাতে খানিক সাড়া মিলেছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে দেখা যায় উঠেছে ৫ কোটি টাকা। অথচ সময় আর বেশি বাকি নেই! স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ বাড়ে।
এর পরই ভাইরাল হয়ে যায় আবদুলকে বাঁচানোর আর্জি। দ্রুত এগিয়ে আসতে থাকেন রাজনীতিক থেকে প্রবাসীদের গ্রুপ, এমনকী সেলেবরাও। যার ফলে শুক্রবারই ৩৪ কোটি টাকা তুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে কমিটি। স্বাভাবিক ভাবেই আবেগে ভাসছেন আবদুলের মা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর পক্ষে স্বপ্নেও কল্পনা করা কঠিন ছিল ওই বিপুল অর্থ শেষপর্যন্ত তোলা সম্ভব হবে। তাঁর কথায়, ”আমি আশাই করিনি ৩৪ কোটি টাকা তোলা সম্ভব হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সবটাই সম্ভব হয়েছে। ”
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এই ঘটনায়। তিনি সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘সারা পৃথিবীর কেরলের বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ফেলেছেন আবদুল রহিমকে মুক্ত করতে, যিনি সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছিলেন। একটা জীবন বাঁচাতে, একটা পরিবারের চোখের জল মোছাতে কেরল ভালোবাসার এক মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.