সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র যন্ত্রের আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন প্রখ্যাত পদার্থবিদ রিচার্ড ফিনম্যান৷ সে-ও প্রায় তিন দশক আগের কথা৷ অনেকেই একে কল্পবিজ্ঞানই ভেবেছিলেন সেই সময়৷ কিন্তু বিজ্ঞানের হাত ধরে সব কল্পনাই যেমন বাস্তব হয়েছে, সভ্যতার অগ্রগতি হয়েছে, এই ক্ষেত্রেও তেমনটাই হওয়ার ছিল৷ সেই আণবিক যন্ত্র এখন আর কল্পনার বস্তু নয়৷ ফিনম্যানের সোহাগের ‘ন্যানো প্রযুক্তির হাত ধরে আণবিক যন্ত্রের গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল এল ফ্রান্সের জঁ পিয়ের সভেজ, ব্রিটেনের জে ফ্রাসের স্টোডডার্ট ও নেদারল্যান্ডের বার্নার্ড ফেরিঙ্গার হাতে৷
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স বুধবার পুরস্কার ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছে, আণবিক যন্ত্র বা বিশ্বের ক্ষুদ্রতম যন্ত্রগুলি নতুন কোনও সরঞ্জাম তৈরিতে, সেন্সরের ক্ষেত্রে কিংবা শক্তি সংরক্ষণে ব্যবহৃত হতে পারে৷ ১৮৩০ সালে মোটর আবিষ্কার যে জায়গায় ছিল এই মুহূর্তে আণবিক মোটর সেই জায়গাতেই রয়েছে৷ বিজ্ঞানীরা সেদিন কিছু সরঞ্জাম প্রদর্শিত করতে পেরেছিলেন৷ তার ১৮০ বছর পর আজ সেই মোটর ব্যবহার করেই বৈদ্যুতিন ট্রেন চলছে, পাখা ঘুরছে, ওয়াশিং মেশিন চলছে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণেও ব্যবহার হচ্ছে৷
তিন বিজ্ঞানী পাবেন নোবেল পদক, মানপত্র ও অর্থ পুরস্কার৷ ৯ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার তিন বিজ্ঞানীকে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে৷ ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানোমিটার স্কেলের গঠনকাঠামো তৈরি, যা মিটারের কয়েকশো কোটি ভাগের একভাগ, আবিষ্কারের গবেষণায় সাফল্য পেতে অবশ্য কয়েক দশক সময় লেগে গিয়েছে৷ এখন বিজ্ঞানীরা শিখে গিয়েছেন, কীভাবে একটি চুলের হাজার ভাগের একভাগ মাপের যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব৷ তবে ন্যানো প্রযুক্তির এই সবে পথ চলা শুরু৷ বিজ্ঞানীদের মতে, ভবিষ্যতে নানাবিধ ক্ষেত্রে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার হবে৷ নব্বইয়ের দশকে সভেজ দু’টি অণুর পূর্ণ রিং জুড়ে সচল আণবিক শৃঙ্খল গঠনে সফল হন৷ এরপর আণবিক পেশি ও পরে আণবিক কম্পিউটার চিপও তৈরি করেন তিনি৷ স্টোডডার্ট আণবিক রিংকে অক্ষ ধরে ০.৭ ন্যানোমিটার ওঠানামা করার লিফট বানিয়ে ফেলেন৷ আণবিক মোটর তৈরির কাজটি করেন ফেরিঙ্গা৷ যে মোটর সেকেন্ডে ১ কোটি ২০ লক্ষ বার ঘুরতে পারে৷ তা দিয়ে তিনি বানিয়েছেন চার চাকার গাড়িও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.