সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওড়ার বদলে হেঁটে বা সাঁতরে চলা ‘পাখি’। পৃথিবীর এমনই ব্যতিক্রমী পক্ষীকুলের মধ্যে একটি পেঙ্গুইন। তারও মধ্যে আবার বিরল প্রজাতি লিটল ব্লু পেঙ্গুইন। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় গর্ত খুঁড়ে থাকে পেঙ্গুইন জগতের সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্বজাতি। শান্তশিষ্ট, নির্জনপ্রিয়। কিন্তু এদেরও নিরাপত্তা নেই। রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা শাবল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে ৩টি ছানা পেঙ্গুইন চুরি করে নিয়ে গেছে। ধারাল অস্ত্রের খোঁচায় একটি ছানার মৃত্যু হয়েছে। বাকি ২ টি এখন চোরদের জিম্মায়। ভবিষ্যতে প্রাণে বেঁচে থাকবে কি না, ঠিক নেই। ঘটনা নিউজিল্যান্ডের। উদ্বেগে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিভাগ।
নিউজিল্যান্ডের হকস বে। এখানেই বাস লিটল ব্লু জাতির পেঙ্গুইনের। যেমন নাম, তেমনই আকৃতি। ছোট্ট ছোট্ট পায়ে হেঁটে কিংবা সমুদ্রের জলে কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ায় এরা। থাকে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে। সারাক্ষণ সমুদ্রের আশেপাশে ঘুরে বেড়ালেও জানুয়ারি থেকে মার্চ-এই সময়টা প্রবল ঠাণ্ডার জন্য সাপের মতো মাটির গর্তে ঢুকে যায়। যদিও ঠিক শীতঘুমের মতো পর্যায়ও নয়। অন্যান্য কাজকর্ম স্বাভাবিক থাকে। এমনই মোক্ষম সময়েই মানুষের আক্রমণের মুখে পড়ল পেঙ্গুইনের দল। চোরাকারবারিদের নজর থেকে ছাড়া পেল না বিরলতম লিটল ব্লু পেঙ্গুইন। হকস বে সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে নিজের নীড় থেকেই চুরি হয়ে গিয়েছে ৩টি শাবক। চুরির জন্য নৃশংস উপায় প্রয়োগ করতেও পিছপা হয়নি মানুষ। শাবল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে চুপিসাড়ে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ৩ ছানাকে। শাবলের খোঁচা সহ্য করতে পারেনি এক নরম, তুলতুলে শরীর। তাই বাসার কাছেই লুটিয়ে পড়েছে একজন। বাকি দুজনকে নিয়ে পরাগপর চোরের দল। যারা আসলে চোরা শিকারী।
হকস বে সংরক্ষণ বিভাগের এক আধিকারিক রড হ্যানসেনের কথায়, ‘‘আমরা সমুদ্রের পাড়ে পেঙ্গুইনের একটি বাচ্চাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। মাথায় আঘাত ছিল। তা থেকেই আমাদের ধারণা, চোরাকারবারিদের কবলে পড়ে এর এমন দশা হয়েছে। এমনিতেই এই প্রজাতির পেঙ্গুইনরা বিলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে। তাই এদের টার্গেট করেছে চোরাশিকারিরা। ওরা এটাও জানে, কীভাবে বাসা থেকে ছানাদের চুরি করতে হয়।’’ তবে এসব রুখতে দেশে কড়া আইনও আছে। ধরা পড়লে ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা, দু বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। কিন্তু মুশকিল এই যে, চোরাশিকারির দল এতটাই সন্তর্পণে কুকাজ করে, যার শক্তপোক্ত প্রমাণ আসে না পুলিশের হাতেও। কিন্তু লুপ্তপ্রায় প্রজাতির নীড় ভেঙে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়ার সাজা নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও মিলবে। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের আশা এটুকুই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.