সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে জাল বিস্তার করেছে মারণ ভাইরাস করোনা। বর্তমানে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিতে নিশানা বানিয়েছে এই ভাইরাস। ইটালি ও স্পেনের পর ভরকেন্দ্র এখন আমেরিকা। তবে শঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মাথাতেও। হু হু করে এই দুটো দেশে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখছে ১১ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে ফ্রান্স। ব্রিটেনে লকডাউন তোলার কথা তা যে কার্যকরী হচ্ছে না, জানিয়ে দিয়েছে সরকার।
এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। ইটালি ও স্পেনের পর ফ্রান্সকে গ্রাস করতে শুরু করেছে করাল করোনা। দেশে ইতিমধ্যে ১৫ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ফলে লকডাউন এখন তোলা তো দূরের কথা, সংক্রমণ রুখতে লকডাউন বাড়ানো ছাড়া ফ্রান্স সরকারের কাছে অন্য কোনও পথ খোলা নেই। ফলে ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া লকডাউন ১১ মে পর্যন্ত জারি থাকবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স সরকার। তারপর স্কুল ও বিজনেস সেক্টরগুলি ধীরে ধীরে খোলার কথা ভাবা হবে। তবে স্পেন এখন উন্নতির দিকে। সেখানে কিছুটা শিথিল হয়েছে লকডাউন। স্পেন সরকারের তরফ থেকে জাননো হয়েছে দেশে মৃত্যুহার কমেছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্তের খবরও তেমন নেই। একইভাবে অস্ট্রিয়ায় কিছু দোকান খুলতে শুরু করেছে। তবে ব্রিটেনের পরিস্থিতি বেশ সঙ্গীন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ১১ হাজার ৩২৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গোটা বিশ্ব প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব বলছে, ব্রিটেন রয়েছে পঞ্চম স্থানে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে ক্রমশ। সরকারের আশঙ্কা, ইউরোপে সম্ভব করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হতে চলেছে ব্রিটেন। সরকারের পক্ষ থেকে এর সাফাইও দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, দেশে করোনা মোকাবিলায় তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। করোনা পরীক্ষা ও সুরক্ষামূলক কিট পর্যাপ্ত ছিল না। বরিস জনসন অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত লকডাউন প্রক্রিয়াও হয়েছে ঢিমেতালে। তবে পররাষ্ট্রসচিব ডমিনিক রাব জানিয়েছেন, করোনা যুদ্ধে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছে ব্রিটেন। যদিও লড়াই এখনও অনেক বাকি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সেই কারণেই জনগণের স্বার্থে জরি করা বিধি নিষেধ এখনই প্রত্যাহার করা হবে না।
ইউরোপে মৃত্যুর সঙ্গে বেশি হলেও করোনার ভরকেন্দ্র কিন্তু এখনও আমেরিকা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র নিউ ইয়র্ক শহরেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ হাজার। পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার প্রায় অর্ধেক নিউ ইয়র্কের। মার্কিন মুলুকে এই শহরের অবস্থাই সবচেয়ে শোচনীয়। যদিও নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো জানিয়েছেন, সবচেয়ে খারাপ সময় অতিবাহিত। তিনি ধীরে ধীরে অর্থনীতির পুনরায় খোলার পরিকল্পনায় কাজ শুরু করছেন। কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতিকে ফের আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লকডাউন ধাপে ধাপে তুলে দিতে চান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.