সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাপানের ইয়োকোহামা, আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর পর এবার মিশরের লাক্সর উপকূল। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে নীল নদের উপর থমকে গেল বিলাসবহুল জাহাজ। বেশ কয়েকজনের COVID-19 পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়েছে। যার মধ্যে একজন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে বলে খবর। জাহাজটিতে বন্দি হয়ে পড়েছেন তামিলনাডুর ১৮ জন বাসিন্দা। শনিবার তাঁদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের থাবায় সমস্তটাই ভেস্তে গিয়েছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তামিলনাডুর সালেম থেকে এক পর্যটন সংস্থার সঙ্গে মিশর বেড়াতে গিয়েছিল ১৮ জনের একটি দল। ৭ তারিখ তাঁদের ফেরার দিন ঠিক ছিল। কিন্তু নীলনদে প্রমোদতরীতে ভ্রমণে বেরিয়েই বিপাকে পড়েন তাঁরা। ক্রুজে এই ১৮ জন ছাড়াও ছিলেন তেত্রিশ জন ভিনদেশি পর্যটক, ১২ জন ক্রু মেম্বার। তাঁদের কারও মাধ্যমেই নোভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে জাহাজটিতে। বেশ কয়েকজনের শরীরে জীবাণুর সন্ধান মেলে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ক্রু মেম্বাররাও। চেন্নাইয়ের এক ইঞ্জিনিয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তাইওয়ানের এক পর্যটকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় তিনি তাইওয়ান ফিরে যান। বাকিরা সকলে জাহাজের মধ্যেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
এই অবস্থায় জাহাজের সুস্থ যাত্রীদের ঠিকমতো খাবারও জুটছে না। কারণ, সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় রান্নাঘর সাফসুতরো করে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে মজুত থাকা খাবার, পানীয় জলে যতটুকু সময় কাটবে, ততটুকুই। তারপর কী হবে, এই ভেবে মাথায় হাত পড়েছে সকলের। আটকে পড়া ভারতীয় পর্যটক দল দূতাবাসের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছে। মিশরের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাহায্যও চাওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রক একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মিশরীয় ক্রু মেম্বারদের সঙ্গে মন্ত্রকের যোগাযোগ হয়েছে। তাঁরাও কেউ কেউ করোনা আক্রান্ত। এই অবস্থায় মন্ত্রক তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং বাকি উদ্ধারকাজের চেষ্টা করছে। কিন্তু সেই চেষ্টা কবে বাস্তবায়িত হবে? সেই অপেক্ষাতেই দিন কাটাচ্ছেন অন্যান্য যাত্রীরা। এক যাত্রীর কথায়, “প্রথম দুটো দিন যে কী ভয়ে ভয়ে কেটেছে, বলার বাইরে। আমি আর আমার স্বামী নিজেদের কেবিনের বাইরেই বেরইনি। যদি কোনও বিপদ হয়, এই ভেবে। এখন জানি না, নিয়তি আমাদের কোথায় নিয়ে গিয়ে ফেলবে। অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।”
এর আগে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে ডায়মন্ড প্রিন্সেস এবং সান ফ্রান্সিসকো উপকূলে গ্র্যান্ড প্রিন্সেস নামে দুটি প্রমোদতরী আটকে গিয়েছিল। প্রথমটি থেকে ধীরে ধীরে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। কিন্তু গ্র্যান্ড প্রিন্সেস থেকে এখনও সেভাবে উদ্ধারকাজ শুরু হয়নি। ওদিকে আবার মিশরের লাক্সরে ভারতীয় পর্যটকদের নিয়ে আটকে গেল আরেক ক্রুজ শিপ। ফলে করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.