সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক, দুটো নয়৷ একসঙ্গে ১৪টা সিংহ উধাও হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার বিখ্যাত ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক থেকে৷ এখন তারা ঠিক কোথায়, কী অবস্থানে রয়েছে, তা ভেবেই আতঙ্কিত পার্কের আশেপাশের লোকালয়ের মানুষজন৷ পার্ক সংলগ্ন এলাকাজুড়ে জারি করা হয়েছে সতর্কতা৷
ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের পরিধির বাইরেই রয়েছে একটি ফসফরাসের খনি৷ মনে করা হচ্ছে, জাল কেটে বেরিয়ে ১৪টি সিংহ সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে৷ ফলে খনির কর্মীদের সদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে জাতীয় উদ্যানের তরফে৷ লিম্পোপো প্রদেশের প্রশাসন সূত্রে খবর, রেঞ্জার্সদের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ পলাতক সিংহদের খোঁজে সবসময় চতুর্দিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে৷ স্থানীয় পরিবেশ এবং পর্যটন বিভাগের মুখপাত্রের কথায়, ‘ফকসোর মাইনের কর্মী এবং অন্যান্য সদস্যদের আমরা বলেছি, সর্বদা নজর রাখতে৷ এমনকী আশেপাশে থাকা বাসিন্দাদেরও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে৷’
সিংহ উধাওয়ের রহস্য বুঝতে বৈঠকে বসেছিল স্থানীয় প্রশাসন এবং ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ৷ আলোচনায় উঠে এল নিত্যনতুন তথ্য৷ পার্কের অন্যতম মুখপাত্র ফালাহ বলছেন, ‘সম্প্রতি অন্যান্য প্রজাতির সিংহ আনা হচ্ছে পার্কে৷ আর তারা এতদিন ধরে পার্কে থাকা সিংহদের কর্তৃত্ব মেনে নিতে পারছে না৷ পালটা আক্রমণ চলছে৷ সেই ভয়ে এখানকার পুরনো সিংহের দল পালিয়ে যাচ্ছে৷ একসঙ্গে এতগুলো সিংহের উধাও হয়ে যাওয়ায়, সেই সন্দেহই আমাদের মনে উঁকি দিচ্ছে৷’ এর জন্য তিনি প্রাদেশিক প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন৷
এছাড়া এর পিছনে অনেকে মানুষ-বন্যপ্রাণ দ্বন্দ্বকেও দায়ী করছেন৷ কারও কারও আশঙ্কা, ন্যাশনাল পার্কের একেবারে পাশে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করছেন কোনও কোনও মানুষ৷ আর সেই কারণে এলাকাটি আরও নিরাপদ করার জন্য সিংহদের পাচারের কৌশল নিচ্ছে৷ এসব অবশ্য নিতান্তই অনুমান৷ পাচার বা সিংহহত্যার কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত হাতে আসেনি তাঁদের৷
মাত্র দু সপ্তাহ আগেই ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের একটি চিতা সীমানার মধ্যে থাকা সত্ত্বেও দু’বছরের এক শিশুর উপর ঝাঁপিয়ে তাকে হত্যা করেছিল৷ তাঁকে চিহ্নিত করার পর ঝুঁকি এড়াতে চিতাটিকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়৷ হারিয়ে যাওয়া এই ১৪টি সিংহের ক্ষেত্রেও শ্যুট অ্যাট সাইট বা দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও ভাবছে কর্তৃপক্ষ৷ সিদ্ধান্ত যাই হোক, একসঙ্গে ১৪টি সিংহ লোকালয়ে পৌঁছে গেলে কী ভয়ংকর পরিস্থিতি হবে, সেটাই আপাতত মাথাব্যথার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে সকলের কাছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.