সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় আছে, ‘নিয়তি কে নঃ বধ্যতে’। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, নিয়তি কেউ খণ্ডাতে পারে না। আর এই নিয়তির জোরে এক খুদে পিছনে ফেলে দিল বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীদের। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এখন এটাই সত্যি। খেলতে গিয়ে ১০ বছরের খুদে খুঁজে পেল ১১টি ডাইনোসরের ডিমের ফসিল৷ সূত্রের খবর, বাঁধের ধারে খেলতে গিয়েছিল চিনের হেয়ুয়ানের ১০ বছরের খুদে ঝ্যাং ইয়াংঝে। আর তার এই আবিষ্কারে চক্ষু চড়কগাছ বিশ্বের বিজ্ঞানীদের। চিনের স্কুল পড়ুয়ার কীর্তি এখন রীতিমতো চর্চিত বিষয়। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই অসাধ্য সাধন?
জানা গিয়েছে, প্রত্যেকদিনের মতোই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একেবারে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে নদীর বাঁধের ধারে খেলছিল ঝ্যাং। খেলতে খেলতে তার মনে পরে পকেটে রাখা আখরোটের কথা। আখরোটের খোল ভাঙার জন্য বাঁধের ধারে পাথর খুঁজতে শুরু করে ঝ্যাং। পাথর নিয়ে সবে আখরোটের গায়ে মারতে যাবে, তখনই তার চোখ টানল পাথরের একটি অত্যাশ্চর্য বিষয়৷ পাথরের গায়ে গোল গোল সাদা রঙের ছাপ। ছাপটা চেনা চেনা লাগে ঝ্যাংয়ের৷ কোথায় দেখেছি – ভাবতে ভাবতেই শিউরে উঠল ১০ বছরের কিশোর৷ কারণ, এই পাথরই তো সে জাদুঘরে ডাইনোসরদের সংগ্রহশালায় দেখেছে। বিজ্ঞানের বইতেও এরকম ছবি দেখেছে। তবে এটাই ডাইনোসরের ডিম নয় তো?
এই প্রশ্ন মাথায় আসতেই আর সময় নষ্ট করেনি খুদে ঝ্যাং। আখরোট ফেলে পাথর হাতে সোজা বাড়ির দিকে দে ছুট। মাকে জানালে তাঁরও প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। তবু ঝ্যাং জেদ ধরায় পুলিশকে খবর দেন তার মা। পুলিশ এবং হেয়ুয়ান জাদুঘরের এক ডাইনোসর বিশেষজ্ঞ ঝ্যাংয়ের বাড়িতে পৌঁছন। পাথরটি যাচাই করেই নিশ্চিত হন ওই বিশেষজ্ঞ। ঝ্যাংয়ের খুঁজে পাওয়া সেই পাথর ডাইনোসরের ডিমের ফসিল৷ জাদুঘরে তাঁর সহকর্মীদের ডেকে পাঠান তিনি। যেখানে পাথরটি পাওয়া গিয়েছে, ঝ্যাংয়ের সঙ্গে সেই জায়গায় যান তাঁরা। মাটি খুঁড়ে সেখান থেকেই আরও ১০টি ডাইনোসরের ডিমের ফসিল উদ্ধার হয়। আর সেসব হাতে পেয়ে চমকে ওঠেন বিশেষজ্ঞরা৷
ঝ্যাংয়ের মা জানান, ছোট বয়স থেকেই জীববিজ্ঞানে বেশ আগ্রহী তাঁর ছেলে৷ ডাইনোসরের বিষয়ে অনেক বই পড়ে সে। হেয়ুয়ান জাদুঘরেও ডাইনোসরের ফসিল দেখতেও গিয়েছিল। তাই ডাইনোসরের ডিমের ফসিল চিনতে অসুবিধা হয়নি।
তবে, চিনের এই শহরে ডাইনোসরের ডিমের ফসিল পাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। ২০১৫ সালেই রাস্তার তৈরির কাজের সময়ে মাটির নিচ থেকে ৪৩টি ডাইনোসরের ডিমের ফসিল উদ্ধার হয়। সাম্প্রতিক সময়েও এই এলাকায় ডাইনোসরের ডিমের ফসিল রয়েছে, এই গুঞ্জন ছড়াতেই বিশেষজ্ঞরা সেসব উদ্ধারের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন৷ খুদে ঝ্যাংয়ের আবিষ্কার তাঁদের সেই কাজ সহজ করে দিল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.