Advertisement
Advertisement

দুর্ঘটনার জের, ‘অপয়া’ বোয়িং ৭৩৭-কে বসিয়ে দিচ্ছে দশ দেশ

ভারতে দু’টি বিমান পরিবহণ সংস্থা ওই বিমান ব্যবহার করে।

10 countries ground Boeing 737 MAX jets
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 12, 2019 12:14 pm
  • Updated:March 12, 2019 12:14 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ মাসে দু’টি বিমান দুর্ঘটনা। একটি ২০১৮-র অক্টোবরে। ঘটনাস্থল ইন্দোনেশিয়া। মৃত ১৮৯ জন। অন্যটি রবিবার। আন্তর্জাতিক সময় সকাল ৫টা ৪৪ মিনিটে। ইথিওপিয়ায়। মৃত ১৫৭ জন আরোহী। দু’ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান মার্কিন বিমান সংস্থা বোয়িংয়ের তৈরি। দু’টি ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের মডেল নম্বর এক–বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এইট।

বোয়িং এযাবৎ যত রকম বিমান তৈরি করেছে, তার মধ্যে এই ৭৩৭ বিমানেরই চাহিদা আর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। জোড়া ইঞ্জিন, কম খরচে পরিচালনা, আর ওজনে হালকা–এই তিন গুণের জন্যই বিশ্বের সমস্ত লো-কস্ট বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলির পছন্দ এই ৭৩৭ বিমান। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান ৭৩৭ ম্যাক্স এইট ওই ৭৩৭ বিমানেরই আধু্‌নিক এবং চতুর্থ প্রজন্মের সংস্করণ। যাকে আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রায় দশটি দেশ। এদের মধ্যে রয়েছে ইথিওপিয়া, চিন, ইন্দোনেশিয়া, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো এবং ক্যারিবীয় বিমান সংস্থাগুলি। যদিও

Advertisement

[রাখে হরি মারে কে! দু’মিনিটের দেরিতে প্রাণে বাঁচলেন ‘অভিশপ্ত’ বিমানের যাত্রী]

রবিবারের দুর্ঘটনা এবং তার পাঁচ মাস আগের বিমান দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। বেশিরভাগ দেশই আর ভরসা করতে পারছে না বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এইট বিমানের উপর। যাত্রীদের প্রাণের ঝুঁকি নিতে চাইছে না তারা। রবিবার ইথিওপিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় ৩৫টি দেশের ১৫৭ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আট বিমানকর্মীরও। সেই ভয়াবহ পরিণামের কথা ভেবেই আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না সংশ্লিষ্ট দেশগুলি। সবারই এক বক্তব্য। পরিষ্কার আবহাওয়া সত্ত্বেও রবিবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে বিমানটি। অক্টোবরের দুর্ঘটনাতেও গোলযোগ ছিল বিমানেই। তাই ইথিওপিয়ার বিমান দুর্ঘটনার সঠিক কারণ যতদিন না জানা যাচ্ছে, ততদিন ওই বিমান আর উড়বে না যাত্রী নিয়ে। একই মত ভারতেরও। ভারত এখনই ওই বিমানগুলির পরিচালনা বন্ধ না করলেও সোমবার অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িংয়ের কাছে এবিষয়ে জবাবদিহি চেয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতে যে দু’টি বিমান পরিবহণ সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ এবং স্পাইসজেট ওই ৭৩৭ ম্যাক্স এইট বিমান ব্যবহার করে তাদের থেকেও প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছে।

এই মুহূর্তে ভারতে ২১টি এমন বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স এইট বিমান রয়েছে। যার মধ্যে নিয়মিত পরিষেবা দিচ্ছে ১৮টি বিমান। ১৩টি স্পাইসজেটের। আর পাঁচটি জেট এয়ারওয়েজের। এছাড়া গত বছর নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তিনটি নতুন বোয়িং ৭৩৭ম্যাক্স এইট-এর ডেলিভারি পেয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। যেগুলি এখনও উড়ান শুরু করেনি। বিমান সংক্রান্ত তথ্য সংস্থা প্লেনস্পটারস ডট নেট থেকেই মিলেছে এই তথ্য। আরও জানা গিয়েছে, স্পাইস জেট এবং জেট এয়ারওয়েজ–এই দুই সংস্থাই বোয়িংকে বিপুল সংখ্যক ওই ৭৩৭ ম্যাক্স এইট মডেলের বরাত দিয়েছে। জেট এয়ারওয়েজ ১৫৫টি। আর স্পাইসজেট ১৯২টি। ডিজিসিএ দুই বিমান পরিবহণ সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছে, সেই বরাতের কী হবে?

সোমবার অবশ্য দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ব্ল্যাকবক্সের সন্ধান মিলেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ওই ব্ল্যাকবক্স হাতে পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রুত চেষ্টা করছেন, ওই ব্ল্যাকবক্স থেকে যতটা সম্ভব বেশি তথ্য জোগাড় করতে। জানা গিয়েছে, শেষ মূহূর্তে একবারের জন্য ইথিওপীয় এয়ারলাইন্সের বিমানচালকের গলা শুনতে পাওয়া গিয়েছিল বলে জানিয়েছে, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল। কিন্তু, তাকে ফিরে আসতে বলার নির্দেশ দেওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে, এখনও চলছে ইথিওপিয়ায় দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ। যদিও মৃত ব্যক্তিদের অনেকেরই পরিজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ভারতের যে চার যাত্রী ওই বিমানে ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা, নাম শিখা গর্গ, ভারতের পরিবেশ ও বনমন্ত্রকের উপদেষ্টা। রাষ্ট্রসংঘের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে নাইরোবিগামী ওই বিমানে উঠেছিলেন শিখা। কিন্তু, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা থেকে ওড়ার ছ’মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়ে বিমানটি। কোনও আরোহীই বাঁচেননি।

[আমেরিকার নাকের ডগাতেই ছিল মোল্লা ওমর! প্রকাশ্যে সিআইএ-র ব্যর্থতা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement