সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে, ততই চিনে আরও কোণঠাসা হচ্ছে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়৷ শিক্ষা দেওয়ার নামে তাঁদের ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ নিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার চালাচ্ছে চিনা প্রশাসন৷ এমনকী, ক্যাম্পগুলিকে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ আখ্যা দিয়ে, এদের স্বীকৃতিও দিয়েছে বেজিং৷ এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লাল চিনের হালাল-বিরোধী অভিযান৷ তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই ইস্যুতে মুখে কুলুপ এঁটেছে পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো ইসলামিক রাষ্ট্রগুলি৷ চিনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কর্পোরেশনের মতো সংগঠনগুলিও৷ যাকে দু’মুখো নীতি বলে ব্যাখ্যা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
[মার্কিন সংস্থার গোপন নথি পাচার! এফবিআই-এর জালে চিনা গুপ্তচর]
চিনা প্রশাসনের দাবি, মূলত জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসকারী উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে হালালের ধারনা কার্যত গোঁড়ামিতে পরিণত হয়েছে৷ তাঁদের সেই ধারনা থেকে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন৷ ওই সংখ্যালঘু মুসলিমদের যথাযথ শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে চিনের দাবি৷ অভিযোগ, সেই কারণেই শিক্ষাক্ষেত্রের নামে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ গুলিতে ওই চিনা মুসলিমদের উপরে মগজ ধোলাইয়ের নামে অত্যাচার চালাচ্ছে জিনপিং প্রশাসন৷ এখানেই শেষ নয়, প্রশাসনের টার্গেট হতে হয়েছে শিনজিয়াং প্রদেশের ইমামদেরও৷ এমনও হয়েছে, প্রশাসনের নির্দেশে প্রকাশ্যে নাচ করতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁদের৷ সেই ছবিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ জানা গিয়েছে, বর্তমানে চিনে এক মিলিয়ন তুর্কিভাষী মানুষ বসবাস করেন৷ যাঁরা উইঘুরস সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত৷ বলপূর্বক তাঁদের শিনজিয়াং প্রদেশের বিশেষ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে চিনা প্রশাসন এবং সেখান তাঁদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে৷ চলছে অত্যাচার৷ রাষ্ট্রসংঘে পেশ হয়েছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট৷ যার পরেই চিনের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় মার্কিন প্রশাসন৷ সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর এই চিনা আগ্রাসনের প্রতিবাদ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আধিকারিকরাও৷
[নভেম্বরেই ফের বৈঠক ট্রাম্প-কিমের, সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা]
তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, মুসলিমদের উপর চিনের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত মুখ খুলতে দেখা যায়নি কোনও সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসলামিক রাষ্ট্রকে৷ তাঁদের মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব৷ এমনকি তুর্কি নাগরিকদের উপর অত্যাচার চললেও, বেজিং-এর বিরুদ্ধে মুখ বুঝে রয়েছে তুরস্ক৷ এমনকি কাশ্মীর বা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মতামত দিলেও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কর্পোরেশন৷ ইসলামিক রাষ্ট্রগুলির এই দ্বিচারিতার কারণ বুঝতে না পারলেও তা অনুমান করতে পারছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের মতে, চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সু-সম্পর্ক বজায় রয়েছে উল্লেখিত ইসলামির রাষ্ট্রগুলির৷ আর পাকিস্তানের সব ঋতুর বন্ধু চিন৷ আন্তর্জাতিক মহলে একাধিক বিষয়ে চিনের ভরসাতেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ৷ ফলে এই মুহূর্তে চিনের চোখে চোখ রেখে কতটা কথা বলতে পারবে মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলি সেই বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.