তরুণকান্তি দাস: নারী তুমি অর্ধেক আকাশ। কথাটাকে বড় নির্মম রসিকতা মনে হয় এখানকার ভোট আকাশে। ছত্তিশগড়ের ভূমিতে নারীর সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে বস্তার-সহ আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায়। কিন্তু কোনও ভোটে তার প্রতিচ্ছবি নেই। ১১ আসনের একটিতে মহিলা প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নমো নমো করে ‘নারীশক্তি’-র জয়গান গাইছে এই রাজ্য। এবং এটাই প্রথম নয়। এর আগের একাধিক নির্বাচনেও একই ছবি। মহিলারা যেন ব্রাত্য নির্বাচনী যুদ্ধে। এখানে শুধুমাত্র জঞ্জির-চম্পা কেন্দ্রে মহিলার নাম ইভিএমে। এই ধারা চলে আসছে সেই কবে থেকে। বাকি কোনও আসনে তাঁদের নামগন্ধ নেই।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভাইঝি করুণা শুক্লা আখেরে মধ্যপ্রদেশের মানুষ। রাজ্য ভাগ হয়ে ছত্তিশগড় হওয়ার পর তিনি রায়পুরে পাকাপাকি থাকতে শুরু করেন। এবং বিজেপির হয়ে তাঁর লড়াই জঞ্জির কেন্দ্র থেকে। ২০০৪ সালে তিনি ছিলেন বড় দলগুলির একমাত্র মহিলা মুখ। জিতেছিলেন। এবং তার পর দলের সঙ্গে মতভেদ। বিজেপির পাট চুকিয়ে তিনি এখন কংগ্রেসের ঘরে। গত বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংয়ের বিরুদ্ধে। জেতেননি। তাঁর সংসদে যাওয়া যে কেন্দ্র থেকে সেই জঞ্জির কেন্দ্র বহন করছে নারীশক্তির সাক্ষ্য। এখনও।
[ আরও পড়ুন: বিরোধী মানেই দেশদ্রোহী নয়, ঘুরিয়ে বিজেপিকে সহিষ্ণুতার বার্তা দিলেন লৌহপুরুষ ]
তবে ২০০৯ সালের ভোটে জঞ্জির আসনের নাম হয় জঞ্জির-চম্পা। সেখানে লড়েন বিজেপির কমলাদেবী। আর এর পাশাপাশি দুর্গ আসনেও বিজেপি মহিলা প্রার্থী দিয়েছিল। কংগ্রেসের একমাত্র মুখ ছিল মাওবাদী অধ্যুষিত কাঁকের আসনে ফুল দেবী নেতাম। যিনি অবশ্য জিততে পারেননি। গত ভোটেও জঞ্জিরে ছিলেন কমলা দেবী। তবে সেবার করুণা শুক্লা কংগ্রেসের টিকিট পেয়েছিলেন। আর দুর্গ কেন্দ্রে বিজেপি টিকিট দিয়েছিল সরোজ পাণ্ডেকে। সবমিলিয়ে এই হল মহিলা মুখের ছবি। যা বড়ই ঝাপসা। এবারও সংখ্যাটা সেই একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এখানকার মহিলা মানবাধিকার সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব।
করুণা শুক্লা অবশ্য বিষয়টিতে কোনও সচেতনতার অভাব অথবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করেন না। তাঁর মতে, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। যেখানে যেমন যোগ্য প্রার্থী মিলছে তেমনভাবেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দল। তবে বিজেপি কিন্তু কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়ছে না। তাদের মতে কংগ্রেস তো কোনওক্রমে একটা আসনে মহিলা প্রার্থী দিতে পারছে। আমাদের সংখ্যাটা সেখানে একাধিক। আসলে এই রাজ্যে আদিবাসী অধ্যুষিত ক্ষেত্রে মহিলা ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি। সেখানে সংসদে মহিলাদের পাঠানোর ক্ষেত্রে যেন চরম অনীহা সবার। এটাই ছত্তিশগড়। যেখানে ভোটের আকাশে নারীকে দূরবীন দিয়ে দেখতে হয়।
[ আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্বে জোটে স্বস্তি বিজেপির, গেরুয়া শিবিরকে ফের সমর্থন কনরাড সাংমার ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.