নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: আগের উপনির্বাচনে দাদা সুব্রত ঠাকুর হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী তথা নিজের জেঠিমার কাছে৷ এবার কি ভাই শান্তনুর পালা? বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে ফের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ঢুকে পড়ল পরিবারের অন্দরে৷ মতুয়া সম্প্রদায়ের একপক্ষ চান শান্তনু ঠাকুর প্রার্থী হোন৷ আরেকপক্ষ বিরোধিতায় সরব৷ এনিয়ে শনিবার দিনভর উত্তপ্ত হয়ে রইল উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর৷
শনিবার দুপুরে ঠাকুরবাড়িতে জড়ো হন মতুয়া সম্প্রদায়ের ভক্তরা৷ দফায় দফায়চলে আলোচনা৷ বিষয় একটাই৷ আসন্ন লোকসভায় বনগাঁ থেকে তৃণমূল প্রার্থী তথা ঠাকুরবাড়ির বড় বউ মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে কে লড়বেন?একপক্ষ দাবি তোলেন, তাঁরা বাড়ির ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুরকে প্রার্থী হিসেবে চান৷ আরেকপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে তার বিরোধিতা করেন৷ অন্দরের খবর, আগেই বিজেপির পক্ষ থেকে শান্তনুকে প্রার্থী হওয়ার কথা বলা হয়েছিল৷ কিন্তু শান্তনু জানিয়েছিলেন, তিনি ভোটে লড়বেন না৷ কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ঠাকুরবাড়িরই সদস্য মমতাবালা ঠাকুরের নাম ঘোষণা হওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যায়৷ সম্পর্কে জেঠিমা মমতাবালার বিরোধিতা করতে থাকেন শান্তনু৷ বরং বাড়ির বড়ছেলে প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের প্রথম পক্ষের মেয়েকে মমতাবালার বিরুদ্ধে প্রার্থী করার কথাও বলেন৷ বয়ান বদল করে শান্তনু ঠাকুর জানান, এবিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও মতামত নেই৷ ভক্তরা যা চাইবেন, তিনি তাই-ই করবেন৷ এদিন দু’পক্ষের মতবিরোধের জেরে কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঠাকুরবাড়ি৷পরে অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয়৷ মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁরা শান্তনু ঠাকুরকেই বিজেপির প্রার্থী হিসেবে চাইছেন। মহাসংঘের পক্ষে অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, ‘মতুয়াদের সকলের সঙ্গে কথা বলে, আলোচনা করে আমরা শান্তনু ঠাকুরকে এই এবারের প্রার্থী করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷’ প্রধানমন্ত্রীও তাঁকেই প্রার্থী হিসেবে চান বলে জানিয়েছেন অরবিন্দ বিশ্বাস৷
শান্তনু ঠাকুর তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে। কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের মৃত্যুর পর লোকসভা উপনির্বাচনে মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এর বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর বিজেপির প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠাকুর পরিবারের দু’দিকে দুই প্রার্থী হওয়া নিয়ে পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক লড়াই। তবে মমতাবালা ঠাকুর দেত্তর-পুত্র সুব্রতকে প্রায় দু’লক্ষ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সাংসদ হয়েছিলেন। এবার কি ফের রাজনীতির লড়াই ঘরোয়া দ্বন্দ্বে পরিণত হচ্ছে? উত্তর তো সময়ের অপেক্ষা৷