Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভোটার

ভোটার তালিকা থেকে উধাও ১২ কোটি ভোটারের নাম! কাঠগড়ায় কমিশন

ভোট উৎসবে বঞ্চিত ওঁরা!

LS Polls 2019: At least 12 crore people could not cast their votes

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:May 20, 2019 12:30 pm
  • Updated:May 20, 2019 11:18 pm  

শুভঙ্কর বসু: তীরে এসে তরী ডোবা বুঝি একেই বলে। নিশ্চিত ছিলেন ভোটার তালিকায় নাম আছে। কারণ গতবছরও ছিল। কিন্তু বুথে গিয়েই খেলেন মোক্ষম ধাক্কা! ভোটার তালিকা চিরুনি তল্লাশি করেও মিলল না তাঁর নামের হদিশ। ফলে রবিবার ভোট না দিয়েই বুথ থেকে ফিরতে হল বেহালার ব্রতলীনা ধরকে।

লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই টিভিতে, খবরের কাগজে ফলাও করে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ভোট উৎসবে শামিল হতে আহ্বান জানানো হয়েছিল ভোটারদের। দেশের ভবিষ্যৎ জনগণের হাতেই। তাই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছিল কমিশন। অথচ বাস্তবে দেখা উলটো ছবি। বৈধ ভোটার কার্ড থাকতেও ভোটদান থেকে বঞ্চিত হলেন অনেকেই। পরিসংখ্যান বলছে ‘অলটার-ডিলিটেড-শিফট’ কোটায় গোটা দেশে এবার ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অন্তত ১২ কোটি ভোটার। কমিশন অবশ্য এটাকে নিজেদের গাফিলতি বলে মানতে নারাজ। বরং তারা এর কিছুটা দায় সংশ্লিষ্ট ভোটারদের উপরও চাপাচ্ছে। তেমনই দায় চাপানো হয়েছে বেহালার ব্রতলীনা ধরের উপরও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সরকার গড়তে চালকের আসনে নেই উত্তরপ্রদেশ, বুথ ফেরত সমীক্ষায় পূর্বাভাস]

শহরের বেশ কিছু বাসিন্দার একই অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে অভিযোগ। দাবি, গতবছর ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম বিলক্ষণ ছিল। কিন্তু কোন জাদুমন্ত্রে এবছর তা অদৃশ্য হয়ে গেল? ব্রতলীনা দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রের ভোটার। বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিম। এখানকার সানি প্রিপেটরি স্কুলে তিনি বরাবরই ভোট দিয়ে আসছেন। অভিযোগ, ২০১৮-র সেপ্টেম্বরের ভোটার তালিকাতে তাঁর নাম ছিল। নিশ্চিত ছিলেন এবারও আছে। তাই আর গা করেননি। কিন্তু প্রথম ধাক্কাটা লাগে গত ৯ মে। যেদিন কোনও একটি রাজনৈতিক দলের তরফে তাঁর বাড়িতে ভোটার স্লিপ দেওয়া হলে দেখা যায় ব্রতলীনার মা ও দিদির ভোটার স্লিপ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরটা নেই। এরপরই তিনি খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্থানীয় বুথ লেভেল অফিসার বেবি দেবনাথের কাছে বিষয়টা নিয়ে তদবির করতেই উঠে আসে আসল তথ্য। দেখা যায় ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নামটাই বাদ পড়েছে।

ব্রতলীনা পেশায় কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী। তৎক্ষণাৎ তিনি বুথ লেভেল অফিসারকে চেপে ধরেন। এরপর তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়, “ভোটের দিন আসুন। একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে।” সেইমতো তিনি এদিন সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছান। কিন্তু যথারীতি তিনি ভোট দিতে পারেননি। উলটে বিষয়টি নিয়ে কমিশনে একটি অভিযোগ জানাতে বলা হয় তাঁকে। কিন্তু ব্রতলীনার বক্তব্য, “অভিযোগ জানিয়ে হয়তো ভোটার তালিকায় আবার নাম উঠবে। কিন্তু এবার যে ভোট দিতে পারলাম না তার জবাব কে দেবে?”

[আরও পড়ুন: একজিট পোলে মোদি ঝড়, একলাফে সেনসেক্স বাড়ল ৯৬২ পয়েন্ট]

উত্তর কলকাতার কলাবাগানের বাসিন্দা আবদুল রহমত কিংবা মানিকতলার সঞ্চারী সিংয়েরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। রহমতের জন্ম জলপাইগুড়িতে। কাজের সূত্রে বহু আগে কলকাতার কলাবাগানে এসে ওঠেন। আগের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও এবার নেই। কাজেই ষোলআনা ইচ্ছা থাকলেও হাতে কলমে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি তিনিও। ঢুকতে পারেননি ইভিএমের খোপে। ব্রতলীনার মতো সঞ্চারীরও একই অভিজ্ঞতা। শেষলগ্নে এসে দেখা যায় ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে। ভোট দিতে না পেরে তাঁর আক্ষেপ, “কমিশন বলছে আগে নাম চেক করেননি কেন। এটা তো আপনার দায়িত্ব। কিন্তু আমি যে ভোট দিতে পারলাম না তার দায়িত্ব কার?”

কমিশনের যুক্তি, ভুয়ো ভোটার বাদ পড়েছেন ঠিকই কিন্তু নিশ্চিত ভোটারের বাদ পড়ার কথা নয়। এনিয়ে কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, “এবার প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন ও সংশোধনের ব্যবস্থা ছিল। নাম তালিকায় রয়েছে কি না তা সংশ্লিষ্ট ভোটারকে একাধিকবার যাচাই করতে বলা হয়েছিল।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement