নব্যেন্দু হাজরা: এলপিজি-র মতো কি এবার রিজার্ভেশন টিকিটের ভরতুকিতেও অপশনাল পদ্ধতি চালু করতে চলেছে রেল! সম্প্রতি টিকিটের তলায় রেলের নতুন এক বার্তায় তেমনই আভাস মিলছে৷ রিজার্ভেশন টিকিটের তলায় লেখা থাকছে ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়েস রিকভারস অনলি ৫৭ পার্সেণ্ট অফ কস্ট অফ ট্রাভেল অন অ্যান অ্যাভারেজ৷’ অর্থাৎ একজন যাত্রীপিছু রেলের যা খরচ টিকিট থেকে তার ৫৭ শতাংশ আয় হয় রেলের৷ বাকি ৪৩ শতাংশ ভরতুকি দেয় রেল৷ রেলমন্ত্রকসূত্রে খবর, এই বার্তার মাধ্যমে যাত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে আসলে তাঁরা যা ভাড়া দেন, তা দিয়ে যাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার পুরো খরচ ওঠে না৷ রেলকেও বহন করতে হয় প্রায় সমপরিমাণ টাকা৷ তাই রিজার্ভেশন টিকিটে যে ভরতুকি রেল দেয় তা যদি কোনও যাত্রী মনে করেন, তবে তা না-ও নিতে পারেন৷
রেল মনে করছে অবস্থাপন্ন প্রচুর লোক এই ভরতুকির টাকা না-ও নিতে পারেন৷ যেমন দেশে বহু অবস্থাপন্ন পরিবার গ্যাসে ভরতুকি নেন না৷ এতে রেলের ভাঁড়ারে কিছুটা আয় বাড়বে৷ রেলকর্তাদের কথায়, টিকিট কাটার ক্ষেত্রে অপশনাল এই নীতি চালু করা যায় কি না দেখতেই পরীক্ষামূলক ভাবে টিকিটে এই বার্তা দেওয়া হতে পারে৷
রেলমন্ত্রকসূত্রে খবর, বছরে যাত্রী পরিষেবায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা ভরতুকি দেয় রেল৷ ফলে এই খরচ জোগাতে গিয়ে বছর বছর আর্থিক দৈন্যদশা প্রকট হচ্ছে৷ সেই দৈন্যদশার কথা সম্পর্কে যাত্রীদের অবগত করতেই রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত৷ শুধু রিজার্ভেশন টিকিটেই নয়, মাসিক টিকিট, অনলাইন রিজার্ভেশন টিকিট কাটলেও এই মেসেজ আসছে৷ রেলমন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে কোনও সরকারই চায় না রেলভাড়া বাড়াতে৷ কারণ নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে৷ ভাড়া বাড়ালে সাধারণ মানুষ সরকারের বিপক্ষে চলে যেতে পারেন৷ এই ধারণা থেকেই ভাড়া বাড়ানোর ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার৷ যাত্রীরা মনে করেন, ট্রেনে তো তাঁরা টিকিট কেটে ওঠেন৷ পুরোটাই আয় হয় রেলের৷ যাত্রীদের এই ধারণা ভাঙতেই রেলের তরফে এই মেসেজ দেওয়া বলে জানানো হয়েছে৷ যাতে ভবিষ্যতে কখনও রেলের তরফে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব এলে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার না হয়৷ রেলমন্ত্রকের একাংশ তাই টিকিটের নিচে রেলের দেওয়া এই বার্তাকে ভাড়া বাড়ানোর প্রথম ধাপ হিসাবেও মনে করছেন৷ তবে মত যাই থাকুক৷ এই মেসেজ দেওয়ার পেছনে রেলের বড় কোনও পরিকল্পনা রয়েছে বলেই মনে করছেন রেল কর্তারা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.