টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ডেপুটেশন দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত হয়েছেন বিজেপি রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতারাতি জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের দপ্তর লাগোয়া এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসাল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। শুধু তাই নয়, বিডিও অফিসে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারবেননি, শনিবার থেকে বাঁকুড়া শহরে মহকুমা দপ্তরে গিয়ে তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। তবে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপে অবশ্য সন্তুষ্ট নয় বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের দুষ্কতীরাই তো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েও বিশেষ লাভ হবে না।
[বাঁকুড়ায় আক্রান্ত বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএম অফিসের সামনে বেধড়ক মার]
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নকে ঘিরে অশান্তি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ায়। মনোনয়ন জমা দিতে দুষ্কৃতীদের হাতে মার খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বিজেপির রানিবাঁধ দক্ষিণ মণ্ডলের সম্পাদক অজিত মুর্মুর। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বাঁকুড়া শহরে জেলাশাসকদের দপ্তরের ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিল রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গেরুয়াশিবিরের প্রতিনিধিরা। কিন্তু, জেলাশাসকদের দপ্তর চত্বরের তাঁদের ঘিরে ফেলে একদল দুষ্কৃতী। প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখে গেরুয়া কাপড় বাঁধা ছিল। অভিযোগ, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে প্রথমে বিজেপি প্রতিনিধিদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। তারপর বিজেপি প্রতিনিধিদের গাড়ি নামিয়ে রাস্তায় ফেলে পেটায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় দু’জন আটক করেছে পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, জেলাশাসকের দপ্তর, জেলা আদালতের মতো গুরুত্বপূ্র্ণ জায়গায়ও জমায়েত করে রেখেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। মনোনয়ন জমা তো দিতে দেওয়া হচ্ছেইনা, উলটে বিরোধী দলের নেতা-প্রার্থীদের মারধর করা হচ্ছে।
[দুষ্কৃতীদের মারে আহত সিপিএম কর্মীর অবস্থা আরও সংকটজনক]
এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। বাঁকুড়া শহরে জেলাশাসকের দপ্তর ও জেলা আদালত লাগোয়া মহকুমা শাসকের দপ্তরে বসল সিসিটিভি ক্যামেরা। শুক্রবার রাতভর চলে ক্যামেরায় বসানোর কাজ। বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা বসু গোদালা জানিয়েছেন, অশান্তি ঠেকাতে জেলাশাসক দপ্তর ও মহকুমা শাসকদের দপ্তরে কড়া নজরদারি চালাবে পুলিশ। তবে কড়া নজরদারিই নয়, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে যাঁরা বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না, তাঁদের জন্য বিকল্পও ব্যবস্থাও করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার থেকে বাঁকুড়ায় মহকুমা শাসকের দপ্তরেও মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপে অবশ্য সন্তুষ্ট নয় বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের দুষ্কতীরাই তো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েও বিশেষ লাভ হবে না। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ আমল দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। দলের বাঁকুড়া অরূপ খাঁর পালটা দাবি, ‘নিরাপত্তা নিয়ে এত কথা হচ্ছে। কিন্তু, বহু জায়গায় তো আমাদের বিধায়করাই বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে সাহায্য করেছেন। সেকথা তো কেউ বলছে না।’
[ভোটে অশান্তি নয়, বাউল-ঝুমুরেই শান্তির বার্তা লোকশিল্পীদের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.