স্টাফ রিপোর্টার: মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করা যাবে না৷ ওই ট্রেনের সঙ্গে জঙ্গিহানার কোনও সম্পর্ক নেই৷ যে কোনও মূল্যে ইন্দো-বাংলার প্রগতি ও শান্তি বজায় রাখতে হবে৷ মনে রাখবেন বাংলাদেশ ভাল থাকলে আমরা ভাল থাকি৷ ওপার বাংলা খারাপ থাকলে আমরা খারাপ থাকি৷ কোনও ঘটনায় কোনওভাবে বাংলাদেশকে যেন দায়ী না করি৷
ঢাকার রেস্তোরাঁয় জঙ্গিহানার ইস্যুতে এভাবেই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে দু’দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় ও মজবুত করার পক্ষে সোমবার বিধানসভায় সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দু’দিন আগে কলকাতায় মিছিল করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিধায়ক দিলীপ ঘোষ মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধের দাবি করেছিলেন৷ এদিন স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপির সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে সম্প্রীতি ও সুসম্পর্কের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি এখানে আছেন৷ আপনি কেন মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করার কথা বলছেন? এটা পুরোপুরি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত৷ মৈত্রী এক্সপ্রেস মানে দু’দেশের সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্কের প্রতীক৷ মনে রাখতে হবে, এরা সঙ্গে দু’দেশের আবেগ জড়িয়ে আছে৷ আমরা সবাই চাই, ইন্দো-বাংলা সম্পর্ক মজবুত হোক৷ পুরোহিত-ইমাম কেউই খুন হোক আমরা চাই না৷ রেস্তোরাঁয় যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক, মর্মান্তিক৷ নিন্দার কোনও ভাষা নেই৷ সন্ত্রাসবাদীদের কোনও জাত বা ধর্ম নেই৷ বিষয়টি নিয়ে কেউ যেন রাজনীতি না করেন৷ কথায় কথায় কেন সব কিছুতেই এত অসহিষ্ণু হব? প্রতিবেশী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ খুবই বন্ধু দেশ৷ কিছু বলতে গেলে দশবার ভাবতে হয়৷ চট করে কিছু বলতে পারি না৷ পরস্পরকে পরস্পরের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে৷ এমন সমস্ত ঘটনায় রাজনীতির ইস্যুকে বাদ দিন৷ সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে৷” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনা যে তিনি নজরে রেখেছেন এবং কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলেছেন তাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
দ্বিতীয় দফায় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে একাধিক কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ দলেও যে নানা অনুশাসন ও শৃঙ্খলার পাশাপাশি নানা কাজে যুক্ত থাকা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন তাও এদিন বিধানসভায় উল্লেখ করেন মমতা৷ বলেন,“তিনটি বিষয় নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেবই৷ গরু পাচার, নোট পাচার, আফিম ও সোনার লেনদেন যে কোনও মূল্যে বন্ধ করবই৷ এক্ষেত্রে কোনও জাতি-সম্প্রদায় ও ধর্ম-বর্ণ দেখব না৷ অন্যায় করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না৷” এর আগে কালিয়াচকের ঘটনার উল্লেখ করে বিরোধীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান,“প্লিজ, সব কিছুকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করবেন না৷ অন্যায় বা দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যে কোনওমতেই সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলতে দেওয়া হবে না৷” সীমান্ত-সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“স্বাধীনতার পর এত বছর পার হয়ে গেল৷ কিন্তু এখন কাঁটাতারের বেড়া সম্পূর্ণ দেওয়া গেল না৷ কেন্দ্রের হাতেই তো বিএসএফ, সিআইএসএফ৷ তবু বাংলাদেশের রেস্তোরাঁর ঘটনার পর আমরা নজর রেখেছিলাম৷ সীমান্ত এলাকায় পুলিশ পাঠিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে৷ রাজ্য সরকার ও পুলিশ যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে৷” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিধানসভার লবিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধের কথা বলেছি, কিন্তু করিনি৷ তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মেরে কেটে শেষ করে দিচ্ছে৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.