সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে পঞ্চায়েত ভোটে এক বিজেপি প্রার্থীর মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও বিজেপি এই মৃত্যুর ঘটনায় সরাসরি তৃণমূলকেই দায়ী করেছে। এদিকে বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ১ নম্বর ব্লকের দড়িকেওড়াডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থীর শুক্রবার মৃত্যু হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত ওই বিজেপি প্রার্থীর নাম ভোলানাথ মন্ডল (৪৫)। এবার পঞ্চায়েত ভোটে দড়িকেওড়াডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৯ নং বুথে বিজেপির প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।
মৃত বিজেপি প্রার্থীর পরিবারের অভিযোগ, মনোনয়নের পর থেকেই ভোলানাথ মন্ডলকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ২২ জুন বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ। আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করান তিনি। এরপর নির্বাচনও লড়েছিলেন ভোলানাথ। গত ১১ জুলাই ভোটগণনার দিন গণনাকেন্দ্র থেকে বেরোনোর সময় তাঁকে ফের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, ভোটে পরাজিত হয়ে আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি শিরাকোলে গিয়ে ওঠেন তিনি। যদিও বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা পরিবহন প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মন্ডলের অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ডায়মন্ড হারবার জেলা বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য জানিয়েছে, ভোলানাথের বিরুদ্ধে তৃণমূল ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মিথ্যে অভিযোগ করেছিল।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে অসুস্থ বোধ করায় ভোলানাথকে প্রথমে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই দুপুরে মৃত্যু হয় তাঁর। বিজেপি এই মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলকেই দায়ী করেছে।
ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অভিজিৎ সর্দার অভিযোগ করেন, বারবার তৃণমূলের হাতে মার খেয়েই বিজেপি প্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তৃণমূলের হাতে মার খেয়েই তাঁদের দলীয় প্রার্থী অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন বিজেপি জেলা সভাপতি। যদিও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পরিবহন প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মন্ডল বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তৃণমূলের কেউই এই মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী নয়। তৃণমূলকে মিথ্যেই দোষারোপ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পরিবারের লোকজন কোনও অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত শুরু হবে।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল-সহ ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব এদিন ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে আসেন ও পরে দলীয় প্রার্থীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চেয়ে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.