সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: লালগড়ের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার! চোখের ভুল নয়। বন দপ্তরের রাখা ক্যামেরায় ধরা দিলেন দক্ষিণ রায়। সুন্দরবন বা বক্সায় যাকে দেখতে অভ্যস্ত রাজ্যবাসী তাকে অচেনা জায়গায় দেখে তোলপাড় গোটা রাজ্য।
গত এক মাস ধরে লালগড়ের মধুপুরের কাছে মেলখেড়িয়ায় জঙ্গলে বাঘের মতো বিশালাকার জন্তু দেখেছিলেন স্থানীয়রা। কয়েক দিন আগে গ্রামে ঢুকে সেই জন্তু গরু মেরেছিল। প্রথমে তাদের কথা অনেকে বিশ্বাস করেননি। কিন্তু ভূমিপুত্রদের কিছু ব্যাখ্যায় বন দপ্তর বুঝতে পারে বিষয়টি গুজব নয়। রাতারাতি জঙ্গলে বসানো হয় সাতটি ক্যামেরা। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের উপযুক্ত পরিবেশের জন্য কৃত্রিমভাবে জঙ্গলে পচা বা মরাজাতীয় দুর্গন্ধ তৈরি করা হয়। তারপরই মিরাকল। বিভিন্ন দিক থেকে দক্ষিণ রায়ের ছবি উঠে আসে বন দপ্তরের সাত নম্বর ক্যামেরায়। মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা এর সত্যতা মেনে নিয়ে জানান, এই মুহূর্তে একটি পুরুষ পূর্ণবয়স্ক বাঘের ছবি ধরা পড়েছে। বাঘ ধরতে খাঁচা পাতার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রামের বন দপ্তরের কর্মীদের পাশাপাশি সুন্দরবন থেকে বন দপ্তরের টিম থেকে একটি টিম লালগড়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। বাঘটিকে বাগে আনা গেলে ঝড়খালির রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। পাশাপাশি বক্সার টাইগার রিহ্যাব সেন্টারেও তার জায়গা হতে পারে। লালগড় যেহেতু জনবহুল এলাকা। তার জন্য গ্রামের লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের জঙ্গলে যেতে বারণ করা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে যেটি কোটি টাকার প্রশ্ন লালগড়ে কীভাবে রয়্যাল বেঙ্গল এল? এই নিয়ে বন দপ্তরও ধোঁয়াশায়। মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিএফও বুঝতে পারছেন না কোথা থেকে বাঘটি এসেছে তা বলা এই মুহূর্তে কঠিন। তবে পার্শ্ববর্তী ওড়িশা থেকে আসতে পারে।
বাঘ বিশেষজ্ঞরা এক বাক্যে বলছেন, লালগড়ের মতো জঙ্গলে বাঘের আনাগোনা কখনও দেখা যায়নি। রয়্যাল বেঙ্গলের এই গতিবিধি সম্পর্কে দুটি সম্ভাবনা জানা যাচ্ছে। প্রথম ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে বাঘটি আসতে পারে। আর একটি মত বলছে পালামৌ-হাজারিবাগ থেকে দলমা হয়ে দেখা দিতে পারে দক্ষিণ রায়। কারণ এই রুটটিও যথেষ্ট সহজ। যদি তাই হয় সেক্ষেত্রে প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে এটা হলে সবথেকে দীর্ঘ পথ হবে। টানা ৮০ কিলোমিটার অতিক্রম করা বাঘেদের পক্ষে বিশাল কিছু নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.