সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনের থেকে বড় নয় উৎসব, একথা যেমন ঠিক, তেমনই ছোট-বড় উৎসব পার্বণই তো অর্থবহ করে তোলে নশ্বর মানুষের জীবনকে। কিন্তু সে সব এখন মিথ্যে ইউক্রেনের (Ukraine) মানুষের জন্যে। ফলে এবার সেদেশে হচ্ছে না পরব মাসলেনিৎসা (Maslenitsa)। যা আসলে শীতকে বিদায় জানিয়ে বসন্তকে স্বাগত জানানোর উৎসব। মারণ যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে সপ্তাহব্যাপী সেই আনন্দের দিনগুলিকে।
মাসলেনিৎসার সঙ্গে মিল আছে বাঙালির পৌষ সংক্রান্তির। এও আসলে পিঠেপুলি উৎসব। মাসলেনিৎসার বাংলা হল প্যানকেকের সপ্তাহ। এবারে সেই সপ্তাহ পড়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত।
কৃষিই সভ্যতার ভিত্তি। সে ভারতে যেমন, ইউক্রেনেও তেমনই। পাতাঝরা শীতের দিনগুলির শেষে উর্বরতার উদযাপন করা হয় উৎসব মাসলেনিৎসায়। ইউক্রেন ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে এইসময় মাসলেনিৎসাকে কেন্দ্র করে হয় রঙিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। অনেক মেলা হয়, সনাতনী পোশাক পরে সেই মেলায় ঘুরতে যান স্থানীয়রা। একসঙ্গে বরফের দুর্গ বানানো, পিঠে তৈরির প্রতিযোগিতা-সহ ছোট ছোট খেলার আয়োজন হয়ে থাকে। আর ঘরে ঘরে তৈরি হয় সুস্বাদু প্যানকেক। এক সপ্তাহ ব্যাপী উৎসবের শেষের দিনটা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহশেষের সেই রবিবারটিকে বলা হয় ‘সানডে অব ফরগিভনেস’ বা ‘ক্ষমা প্রার্থনার রবিবার’। এইদিনে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি গিয়ে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চান মানুষ। এইসঙ্গে ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া তো চলেই। কিন্তু এবারে রুশ হানায় মৃত্যু হয়েছে ইউক্রেনের অন্যতম বড় উৎসবের! ভবিষ্যৎ পৃথিবী কি কখনও ক্ষমা চাইবে তার জন্যে?
উল্লেখ্য, মাসলেনিৎসা একা ইউক্রেনের উৎসব নয়, তা আক্রমণকারী রাষ্ট্র রাশিয়ারও (Russia) অন্যতম বড় উৎসব। মেধাবী মানুষ জানেন, যে কোনও যুদ্ধ মূলত রাষ্ট্রপ্রধানদের, তার সঙ্গে সবসময় একমত হন না খেটে খাওয়া আমজনতা। যদিও তাদের ইচ্ছে-অনিচ্ছের পরোয়া করে না ক্ষমতান্ধ শাসক। অথচ যুদ্ধ পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় শিকার হন সেই গরিবগুর্বোই। কথায় আছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের মতোই রাশিয়াতেও বাতিল হয়েছে বসন্তের উৎসব। অপমৃত্যু হয়েছে বছরকার আনন্দের দিনগুলির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.