রাহুল চক্রবর্তী: এবার ত্রিপুরায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকেই মমতার ঘোষণা, ত্রিপুরায় এবার তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করবে৷
বাংলায় মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ৩৪ বছরের বামফ্রণ্ট শাসনের অবসান ঘটেছিল৷ দেশের যে দু’টি রাজ্যে সিপিএম এখনও ক্ষমতায় রয়েছে তার মধ্যে একটি ত্রিপুরা৷ অন্যটি কেরল৷ ১৯৯৮ সাল থেকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম৷ টানা ১৮ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন মানিক সরকার৷ বাংলায় সিপিএমকে হটিয়ে যেভাবে উন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার সেই পথেই উন্নয়ন চাইছে ত্রিপুরা৷ ওই রাজ্যে প্রাক্তন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এখন কার্যত সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে৷ সবথেকে বড় উদাহরণ ত্রিপুরায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মন-সহ ছয়জন কংগ্রেস বিধায়ক দিন কয়েক আগেই যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে৷ এখন ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল৷ রাজ্যের মানুষের বিপুল সমর্থনে বাংলা থেকে সিপিএম কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে৷ এবার ত্রিপুরাকেও ‘একদা’ বাম শাসনের রাজ্যে পরিণত করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস৷ যার ঘোষণা হয়ে গেল বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে৷ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস ত্রিপুরায় এবার সরকার গঠন করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ আমরা সেখানে উন্নয়ন করতে চাই৷ সেখানকার মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই৷ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের ভালবাসা ও পরিষেবা দেওয়া আমাদের কাজ৷ মানুষের জন্য আমরা কাজ করব৷”
বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভামঞ্চ থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৯ আগস্ট ত্রিপুরা যাচেছন তিনি৷ সেখানে তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে৷ ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে৷ ফলে বছর দুয়েক আগে থেকেই সেখানে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস৷ আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কংগ্রেসের নেতারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷ কংগ্রেসের সংগঠন ভেঙেছে৷ ২০১১ সালে বামেদের সরিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পাঁচ বছরে তৃণমূল সরকারের সুফল বাংলার মানুষ যে পেয়েছেন, তার উদাহরণ ২০১৬ সালের নির্বাচন৷ একা লড়ে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২১১ আসন৷ বাংলায় উন্নয়ন হয়েছে৷ এবার উন্নয়ন চাইছে ত্রিপুরাও৷ যে প্রসঙ্গটা উঠে এসেছে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মনের কথায়৷ ধর্মতলার সভামঞ্চ থেকে সুদীপবাবু বলেন, “সিপিএমের অত্যাচারে মানুষ বসবাস করতে পারতেন না৷ ৩৪ বছর পর ২০১১ সালে গণতন্ত্রের আসল স্বাদ বাংলার মানুষ পেয়েছেন৷ উন্নয়নকে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন৷ এবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে ত্রিপুরায় সরকার গঠন করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সেখানকার মানুষও উন্নয়ননের স্বাদ পাবেন৷” কংগ্রেসের থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়, সেই কারণেই তৃণমূলে এসেছেন বলে জানান সুদীপবাবু৷ সভার পরে সুদীপবাবু এও জানান, এখন থেকেই ত্রিপুরাবাসী চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই উন্নয়নের জোয়ার আসুক ত্রিপুরায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.