ধীমান রায়, কাটোয়া: ১২ বছর অন্তর বিসর্জন হয় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের সিদ্ধেশ্বরী মাতার। আউশগ্রামের গন্না গ্রামে এই রেওয়াজ প্রায় পাঁচশো বছরের। প্রথা মেনে দেবীর স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর প্রতিমার বিসর্জন দেওয়া হয়। এক যুগ পার করে ফের তৈরি হবে দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি।
[ধস-গ্যাস-আগুনে ত্রাতা জামুড়িয়ার ‘উইঢিবির কালী’]
আউশগ্রামের দিগনগর অঞ্চলের গন্না গ্রামে আর কোনও কালীপুজো হয় না। বাগদিপাড়ার সিদ্ধেশ্বরী পুজো ঘিরেই আনন্দে মাতেন এলাকাবাসী। শুধু গ্রামেরই নয়, সিদ্ধেশ্বরীদেবীর মাহাত্ম্যের কথা দূরদূরান্তের গ্রামেও প্রচারিত। কোনও ব্রাহ্মণ নয়, বাগদিপাড়ায় তফসিলি জাতিভুক্ত চার-পাঁচটি পরিবার সিদ্ধেশ্বরীমাতার দেয়াসী বা সেবাইত। জনশ্রুতি, বাগদি পরিবারের এক পূর্বপুরুষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রথম সিদ্ধেশ্বরীমাতার পুজো শুরু করেছিলেন। পরে পরিবার বেড়েছে। বংশের কন্যাদের সন্তানসন্ততিদের অনেকে গন্না গ্রামে বসবাসের সুবাদে এই পুজোর শরিক হন। তবে পুজোর অধিকার শুধুমাত্র মূল বংশধরদেরই। নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধেশ্বরীমাতার পুজোয় মোষ, মেষ ও ছাগ বলি হয়। পাশাপাশি রয়েছে এক অদ্ভূত নিয়ম। সেবাইত সন্ন্যাসী বাগদি জানান, বলিদানের আগে মোষ ও মেষের মধ্যে বিবাহও দেওয়া হয়। তারপর হয় বলিদান।
গন্নাগ্রামের বাসিন্দা জিতেন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের গ্রামে দ্বিতীয় কালীপুজো নেই। সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজো পারিবারিক হলেও গ্রামবাসীরা তাতে অংশ নেন। পুজো উপলক্ষে গ্রামে মেলা বসে। গ্রামবাসীদের আয়োজনে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। তিন-চারদিন ধরে চলে এই উৎসব। কিন্তু, পুজো শেষে দেবীমুর্তির বিসর্জন হয় না। সেবাইত বংশধররা জানান, দেবীর স্বপ্নাদেশ মেনেই ১২ বছর দেবীমূর্তি মন্দিরে রেখে পুজো হয়। বছরভর নিত্যসেবা চলে। ১২ বছর পর দেবীর স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর নতুন মূর্তি তৈরি হয়।
ছবি: জয়ন্ত দাস
[ শ্যামাপুজো উপলক্ষে হিলিতে মিলিত হয় দুই বাংলা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.