রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: করোনা (Coronavirus) আবহে অধিকাংশই পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করেছে। স্বাভাবিকভাবেই কমেছে প্রতিমার জন্য বরাদ্দের পরিমাণও। যার ফলে আয় কমেছে প্রতিমা শিল্পীদের। সকলের মতোই বাধ্য হয়ে কম টাকাতেই প্রতিমা তৈরি করতে হচ্ছে তেহট্টের (Tehatta) মহিলা মৃৎশিল্পী ছায়া পালের। তবে তাঁর নিষ্ঠায় এতটুকু খামতি নেই।
নদিয়ার (Nadia) তেহট্টের বেতাই সাধুবাজার পালপাড়ায় বাসিন্দা ওই বধূ। গত বছর দশটি প্রতিমা গড়েছিলেন তিনি। এবছর করোনা আবহে অনেকের বাড়ির পুজোই বন্ধ। কেউ আবার কোনওমতে পুজো সারছেন। ফলে গতবারের তুলনায় তিনটি প্রতিমার বরাত কম পেয়েছেন তিনি। আগের তুলনায় দরও মিলছে কম। কোনও প্রতিমার দাম ১০ হাজার তো কোনওটা ১২ হাজার। জানা গিয়েছে, ছায়াদেবীর পরিবারের সকলেই প্রতিমা শিল্পী। প্রতিবেশী বিলাস বিশ্বাস, গোপাল বিশ্বাসরা জানান বিয়ের আগে মূর্তি গড়ার কাজ সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না ছায়াদেবী। ভাসুর, শ্বশুরদের হাতের কাজ দেখে তিনি নিজেই এখন একজন প্রতিষ্ঠিত সুদক্ষ কারিগর। এখন তার হাতে গড়া বিভিন্ন ধরণের প্রতিমা এলাকার মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত।
ছায়া পাল বলেন, “৩৪ বছর আগে মাত্র তেরো বছর বয়সে শ্বশুরবাড়ি সাধুবাজার গ্রামে আসি। বাপের বাড়ি বার্নপুর হালসানা পাড়ায়। বাবা চাষের কাজ করে সংসার চালাতেন। যখন বিয়ে হয় তখন আমাদের শ্বশুরবাড়ির ভরা সংসার ও যৌথ পরিবার, এখন সকলের পৃথক। সেই সময় সংসারের কাজ সামলে অবসরে শ্বশুর, ভাসুরদের মূর্তি গড়ার কাজ দেখতাম। সহযোগিতা করতাম। সেই থেকে কাজের হাতে খড়ি।”
এদিন আক্ষেপের সুরে ছায়াদেবী বলেন, “সারাবছরই কোনও না কোনও মূর্তির কাজ করতে হয়। প্রতিমা গড়ে আমাদের সংসার চলে। কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির ফলে লাভ তলানিতে ঠেকেছে। পরিবেশ দূষণের কথা ভেবে ভেষজ রঙে মূর্তি করছি। নিজ নিজ বরাত অনুযায়ী স্বামী, সন্তান অন্যত্র মণ্ডপে গিয়ে কাজ করেন।” ছেলে গোলক পাল বলেন, “বাড়িতে তৈরি মূর্তিগুলি মা নিজে হাতে তৈরি করেন। অবসর সময়ে কখনও কখনও আমরা মাকে নাম মাত্র সহযোগিতা করি মাত্র।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.